কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নোট ইস্যু |Bank Note Issue by Central Bank
বিশ্বের সকল দেশেই ব্যাংক নোট ইস্যুর একমাত্র অধিকারপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান সে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংক নোট ইস্যু, মুদ্রা সরবরাহের নিয়ন্ত্রণ ও মুদ্রা ব্যবস্থার শৃঙ্খলা রক্ষার উদ্দেশ্য নিয়েই কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতিষ্ঠা লাভ করে। পরবর্তীকালে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অন্যান্য কাজেও সম্পৃক্ত হয়। বিনিময় ব্যবহার শুরুর দিকে মানুষ এক দ্রব্যের বিনিময়ে অন্য দ্রব্য ক্রয় বা বিক্রয় করত। দ্রব্যের বিনিময় দ্রব্যের লেনদেন অসুবিধাজনক হওয়ায় পরবর্তীকালে মূল্যবান ও দুর্লভ ধাতব মুদ্রা বিনিময় মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হতো।
সময়ের সাথে ধাতব মুদ্রার ব্যবহারও অসুবিধাজনক বলে প্রমাণিত হয়। অতঃপর শুরু হয় কাগজি মুদ্রার ব্যবহার। শুরুর দিকে দেশের একাধিক ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান কাগজি মুদ্রা প্রস্তুত করত। একাধিক প্রতিষ্ঠান মুদ্রা ইস্যু করাতে মুদ্রা ব্যবস্থার ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাছাড়া এর গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। ফলে ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে রাষ্ট্রসমূহ নোট ও মুদ্রা প্রচলনের একচ্ছত্র অধিকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে অর্পণ করে। এতে মুদ্রা সরবরাহের ওপর নিবিড় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয় এবং শৃঙ্খলা নিশ্চিত হয়।
বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার হওয়াতে মুদ্রা ইস্যুর বিষয়ে আন্তর্জাতিকভাবে কিছু নিয়মকানুন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এদেশে প্রচলিত সব ধরনের ব্যাংক নোট ইস্যুর একচ্ছত্র দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ ব্যাংক ১০, ২০, ৫০, ১০০, ৫০০ এবং ১,০০০ টাকার নোট ইস্যু করে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নোট ইস্যুর নীতিসমূহ|Principles of issuing bank notes by central bank
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ইস্যুকৃত নোট হচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায় । দায়ের বিপরীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সমপরিমাণ সম্পদ সংরক্ষণ করে। নোট ইস্যুর বিপরীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যেভাবে সম্পদ সংরক্ষণ করে তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নোট ইস্যুর নীতি। সময়ের সাথে সাথে নোট ইস্যুর নীতিতে বেশ পরিবর্তন এসেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নোট ইস্যু করার নীতিসমূহ নিম্নরূপ:
১. কাগজি মুদ্রানীতি (Currency principle): কাগজি মুদ্রানীতি অনুযায়ী কোনো দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক নোট ইস্যুর পরিমাণ ধারণকৃত স্বর্ণের (Gold reserve) পরিমাণ দ্বারা সীমাবন্ধ হবে। অর্থাৎ প্রতি একক মুদ্রা ইস্যুর বিপরীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্দিষ্ট পরিমাণ স্বর্ণ সংরক্ষণ করবে।
অন্যভাবে বলা যায়, নির্দিষ্ট পরিমাণ স্বর্ণের পরিমাণের বিপরীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক শুধু নির্দিষ্ট পরিমাণ মুদ্রা ইস্যু করতে পারবে। এ নীতিতে ইস্যুকৃত মুদ্রার নিরাপত্তা, মূল্যের স্থিতিশীলতা ও গ্রহণযোগ্যতা সর্বাধিক। তবে এ নীতি অত্যন্ত অনমনীয়। কারণ দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা পরিবর্তিত হলেও সহজে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন করে মুদ্রা ইস্যু করতে পারে না।
২. ব্যাংকিং মুদ্রানীতি (Banking principle): ব্যাংকিং মুদ্রানীতি অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রা ইস্যুর বিপরীতে শতভাগ স্বর্ণ সংরক্ষণ করে না। বরং স্বর্ণের পাশাপাশি অন্য সম্পদ সংরক্ষণ করেও মুদ্রা ইস্যু করতে পারে। এ নীতি অত্যন্ত নমনীয়। কারণ পরিবর্তিত আর্থিক অবস্থা অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংক নোট ইস্যু করতে পারে। পরিশেষে বলা যায়, প্রতিটি ইস্যুকৃত ব্যাংক নোট কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়। এ দায়ের বিপরীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে পর্যাপ্ত সম্পদ সংরক্ষণ করতে হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ইস্যুকৃত নোটের বিপরীতে সম্পদ সংরক্ষণে উপযুক্ত নীতিসমূহ অনুসরণ করে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নোট ইস্যুর পদ্ধতি|Systems of issuing bank notes by central bank
কাগজি মুদ্রানীতি ও ব্যাংকিং মুদ্রানীতির পারস্পরিক সমন্বয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের মুদ্রা ইস্যু পদ্ধতির উন্মেষ ঘটেছে। ব্যাংক নোট ইস্যু করার পদ্ধতিসমূহ নিম্নরূপ:
১. সর্বোচ্চ আহার পদ্ধতি (Maximum fiduciury system): সর্বোচ্চ আহার পদ্ধতি অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংক ধারণকৃত স্বর্ণের বিপরীতে শুধু নির্দিষ্ট পরিমাণ মুদ্রা ইস্যু করতে পারে। কোনো কারণে মুদ্রা ইস্যুর পরিমাণ বাড়াতে চাইলে ধারণকৃত স্বর্ণের পরিমাণ বৃদ্ধি করে তারপর মুদ্রা ইস্যুর পরিমাণ বাড়াতে পারে। এ পদ্ধতি অত্যন্ত অনমনীয় এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের পরিপন্থি বলে এ পদ্ধতি তেমন একটা অনুসরণ করা হয় না।
২. আংশিক আস্থার পদ্ধতি (Partial fiduciary system): আশিক আস্থ্য পদ্ধতি অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংক আইন অনুযায়ী নির্ধারিত পরিমাণ সরকারি সিকিউরিটি সংরক্ষণ করবে এবং অবশিষ্ট মুদ্রা সরবরাহের জন্য তার বিপরীতে স্বর্ণ সংরক্ষণ করবে। ইংল্যান্ডে ১৮৪৪ সালের “Peel Act- 1844” অনুযায়ী এ পদ্ধতির প্রয়োগ শুরু হয়। এ পদ্ধতি বর্তমানে তেমন একটা অনুসরণ করা হয় না।
৩. বৈদেশিক মুদ্রা সঞ্চিতি পদ্ধতি (Foreign exchange reserve system): বৈদেশিক মুদ্রা সঞ্চিতি পদ্ধতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়িয়ে তার বিপরীতে নতুন করে মুদ্রা ইস্যু করতে পারে।
৪. আনুপাতিক সঞ্চিতি পদ্ধতি (Proportionate reserve system): ১৯১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আনুপাতিক সঞ্চিতি পদ্ধতির প্রয়োগ শুরু হয়। ১৯১৩ সালে পূর্বে যুক্তরাষ্ট্রে ন্যাশনাল ব্যাংকসমূহ সরকারি বন্ড সংরক্ষণের বিপরীতে নিজ নামে নোট ও মুদ্রা ইস্যু করতে পারত। ১৯০৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাংকিং বিপর্যয় দেখা দিলে এ পদ্ধতি গ্রহণযোগ্যতা হারায়। ১৯১৩ সালে এ পদ্ধতির অনুসরণ সম্পূর্ণভাবে বর্জন করা হয়। এ পদ্ধতির পরিবর্তিত রূপ হচ্ছে আনুপাতিক সঞ্চিতি পদ্ধতি।
আনুপাতিক সঞ্চিতি পদ্ধতি অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংক নোট ও মুদ্রা ইস্যুর বিপরীতে নির্দিষ্ট পরিমাণ স্বর্ণ এবং সরকারি সিকিউরিটি সংরক্ষণ করে। এ পদ্ধতি অত্যন্ত বাস্তবসম্মত ও যুগোপযোগী। নোট ইস্যুর ক্ষেত্রে বিভিন্ন পদ্ধতি অনুসরণ করা হলেও উপযুক্ত চারটি পদ্ধতিই বহুল প্রচলিত ও জনপ্রিয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নোট প্রচলনে একচেটিয়া অধিকার|Central Bank's Monopoly Rights of Issuing Notes
কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রাবাজারের অভিভাবক ও নিয়ন্ত্রক। এটি দেশের অর্থনীতির স্বার্থে নোট ও মুদ্রা প্রচলন করে। মুদ্রা প্রচলনের প্রথম দিকে কতিপয় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর উপর নোট ইস্যুর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজস্ব মুনাফাবৃদ্ধির লক্ষ্যে মনোযোগী হয়। একাধিক প্রতিষ্ঠান নোট ইস্যু করায় মুদ্রা ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ ও এর গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। পরবর্তীতে নোট ইস্যুর দায়িত্ব কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উপর ন্যস্ত করা হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের অর্থনীতির স্বার্থে নোট ও মুদ্রা প্রচলনে একমাত্র অধিকার ভোগ করে থাকে। একচেটিয়া অধিকার ভোগ করার যৌক্তিকতা আলোচনা করা হলো:
১. দেশের অর্থনীতির স্বার্থে শিল্প-বাণিজ্য, মুদ্রাবাজার, মূল্যস্তরের উপর সরকারের কার্যকর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা।২. কেন্দ্রীয় ব্যাংক সর্বজন গৃহীত একমাত্র ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান। যার কারণে নোট প্রচলনে একক অধিকার ভোগ করে।
৩. কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারের ব্যাংক হওয়ায় নোট ইস্যুতে নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা বজায় রেখে নোট ইস্যু করতে পারে।
৪. কেন্দ্রীয় ব্যাংক নোট ইস্যু করায় তালিকাভুক্ত ব্যাংকসমূহের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পারে।
৫. কারণ দ্রব্যমূল্যের স্থিতিশীলতা নোট ও মুদ্রা সরবরাহের স্থিতিশীলতার উপর নির্ভর করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতার জন্য একক নোট ইস্যু অধিকার লাভ করে।
৬. দেশের কাম্য অর্থ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক অন্যতম ভূমিকা রাখে।
৭. কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারের ব্যাংক বিধায় জনসাধারণের আস্থা অর্জন করে নোট ইস্যু করতে পারে।
৮. সর্বোপরি দেশের আর্থিক খাত সঠিকভাবে বজায় রাখতে পারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
উপরিউক্ত আলোচনা থেকে বলা যায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারের পক্ষে মুদ্রার সুষ্ঠুমান নিয়ন্ত্রণ ও মুদ্রাবাজার স্থিতিশীল রেখে নোট প্রচলন করে বিধায় একচেটিয়া অধিকার ভোগ করে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক অর্থের যোগান নিয়ন্ত্রণ|Controling of Money Supply by Central Bank
অর্থের যোগান বলতে কোনো দেশের অর্থনীতিতে যাবতীয় লেনদেন সম্পাদনের জন্য সহজলভ্য অর্থের পরিমাণকে বোঝায়। অর্থ হচ্ছে সেইসব বিনিময় মাধ্যম যার দ্বারা পণ্যদ্রব্য ও অন্যান্য সম্পদের বিনিময় সম্পন্ন হয়। সে দিক থেকে অর্থ বলতে সরকারি নোট, ব্যাংক নোট, ব্যাংকের চেক প্রভৃতিকে বোঝায়। তবে অর্থ সরবরাহের মূল উপাদান হচ্ছে সরকারি নোট ও ব্যাংক নোট।
তাই অর্থ সরবরাহ বলতে প্রধানত সরকারি নোট ও ব্যাংক নোটের সহজলভ্যতাকেই বোঝায়। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, একটি নোট বা মুদ্রা নির্দিষ্ট সময়ে যতবার হাত বদল হয় বা লেনদেন সম্পাদনে ব্যবহার করা হয় সেটি তত টাকার কাজ করে। অর্থের এ বৈশিষ্ট্যকে অর্থের প্রচলন গতি বলে। অর্থাৎ অর্থ সরবরাহ হলো ইস্যুকৃত মুদ্রার মোট মূল্য ও তাদের গড় প্রচলন গতি গুণফল। কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক মুদ্রা সরবরাহের পরিমাণ হ্রাস ও বৃদ্ধি করার প্রক্রিয়াকে অর্থের যোগান নিয়ন্ত্রণ বলা হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক অর্থের যোগান নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি|Method of Controling of Money Supply by Central Bank
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিসমূহের সাথে অর্থের যোগান নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতিসমূহের নিল রয়েছে। ঋণ নিয়ন্ত্রণই প্রকারান্তরে অর্থ সরবরাহকে প্রভাবিত করে ঋণের পরিমাণে হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটলে তা অর্থ সরবরাহের পরিমাণেও একই ধরনের পরিবর্তন সাধন করে। সে কারণে ঋণ নিয়ন্ত্রণ ও অর্থ সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ একই ধরনের পদ্ধতি। অর্থের সরবরাহ বা যোগান নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতিসমূহ নিম্নরূপ:
১. খোলা বাজার পদ্ধতি (Open market operation): কেন্দ্রীয় ব্যাংক আর্থিক বাজারে বিশেষ করে বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহের নিকট সিকিউরিটি ক্রয়-বিক্রয় করে অর্থ সরবরাহের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। যা খোলা বাজার পদ্ধতি নামে পরিচিত। খোলা বাজার পদ্ধতির মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরাসরি সরবরাহকৃত মুদ্রার সংখ্যা (Monetary base) নিয়ন্ত্রন করে। আর্থিক বাজারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সিকিউরিটি বিক্রয় করে বাজার হতে অর্থ তুলে নেয় ফলে অর্থ সরবরাহের পরিমাণ হ্রাস পায়।
বিপরীতক্রমে বাজার হতে সিকিউরিটি পুনরায় ক্রয় করলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিকট হতে অর্থ বাজারে চলে যায় এবং বাজারে মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় ব্যাংক সিকিউরিটি ক্রয় করলে মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধি পায় এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক সিকিউরিটি বিক্রয় করলে মুদ্রা সরবরাহ হ্রাস পায়। এ পদ্ধতি মুদ্রা সরবরাহ নিয়ন্ত্রণের প্রত্যক্ষ পদ্ধতি।
২. কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণদান (Lending by central bank): কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণের সর্বশেষ আশ্রয়স্থল। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহকে ঋণদান করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণদানের পরিমাণ বৃদ্ধি করলে বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহের ঋণদানও বৃদ্ধি পায় ফলে বাজারে অর্থ সরবরাহের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণের পরিমাণ হ্রাস করলে অর্থ সরবরাহের পরিমাণও হ্রাস পায়।
৩. নগদ জমার হার পরিবর্তন (Change in reserve requirement): বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ আমানতের একটি নির্দিষ্ট অংশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে এবং নিজের কাছে জমা রাখে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এরূপ সঞ্চিতির হার বৃদ্ধি করলে মুদ্রা সরবরাহ হ্রাস পায়। এবং সঞ্চিতির হার কমালে মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধি পায়।
উপর্যুক্ত উপায়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রা সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করে। মুদ্রা সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ ও ঋণ নিয়ন্ত্রণ পরস্পরের সাথে সংগতিপূর্ণ । কারণ ঋণের পরিমাণ বাড়লে অর্থ সরবরাহের পরিমাণ বাড়ে এবং ঋণের পরিমাণ কমলে অর্থ সরবরাহের পরিমাণ কমে।