ই-কমার্সের ধারণা | Concept of E-commerce

ই-কমার্স কি|What is e-commerce?

ই-কমার্স এর ফুল মিনিং হচ্ছে ইলেক্ট্রনিক কমার্স।এটি কমার্স বা ব্যবসায়ের আধুনিক রুপ।ই-কমার্স হচ্ছে অনলাইন বেজড ব্যবসা।এ অনলাইন ব্যবসা দুইভাবে করা যায়।
১. ওয়েবসাইটের মাধ্যমে
২. বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম। যেমন, ফেসবুক পেজের মাধ্যমে। অবশ্য ফেসবুক পেজের মাধ্যমে ব্যবসাকে এফ-কমার্স বলা হয়। কিন্তু এটা ই-কমার্সের একটা রুপ।

বাণিজ্য বলতে বোঝায় উৎপাদকের কাছে কাঁচামাল সরবরাহ করা কিংবা উৎপাদিত পণ্য বা সেবা ভোক্তার হাতে পৌঁছে দেওয়া। যদি কাঁচামাল কিংবা উৎপাদিত পণ্য বা সেবা সরবরাহের কাজে ইন্টারনেট প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় তবে তাকে ই-কমার্স বলা হবে।

সাধারণ অর্থে, ইলেকট্রনিক মাধ্যম ব্যবহার করে পণ্য কেনা - বেচার কাজ করাকে ই-কমার্স বলে। অর্থাৎ, পণ্য বা সেবার বাণিজ্য অনলাইন পদ্ধতিতে হলে তা ই-কমার্স নামে পরিচিতি পায়। ই-কমার্সে মূলত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করে ই-কমার্স গ্রাহক বা ক্রেতাদের সাথে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে পণ্য বা সেবা বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়। এজন্য ইন্টারনেট প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে পণ্যদ্রব্য বা সেবাকর্ম ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যবসায়িক তথ্য দেওয়া-নেওয়া, উপকরণ ক্রয়, বিপণন, পণ্য ও কেনা -বেচা সেবা সরবরাহ প্রভৃতি কাজ সম্পাদন করা হয়। ই-কমার্সের প্রধান ধরনগুলো হলো— B2B, B2C, C2B, B2G ও P2P।

ই-কমার্সের ইতিহাস | History of E-commerce


বর্তমানে আমরা ই-কমার্স বলতে বুঝি অনলাইনের মাধ্যমে কেনাকাটা করা। কিন্তু পূর্বে ই-কমার্সের আসলে এমন ছিল না।তো চলুন জেনে নেয়া যাক পুর্বে কেমন ছিল এবং বর্তমান অবস্থায় কীভাবে এলো।

১৯৭১/১৯৭২ সালে ARPANET ব্যবহার করে স্ট্যানফোর্ড আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্ট ল্যাব এর শিক্ষার্থী এবং ম্যাসাচুসেট ইন্সটিটিউট অব টেকনলজির শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারিজুয়ানা বিক্রি হয়। ১৯৯০ সালে www- এর জনক টিম বার্নারস লি প্রথম ওয়েব ব্রাউজার শুরু করেন, যা ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব নামে পরিচিত। এর ফলে ইন্টারনেট জগতে বিপ্লবের সূচনা হয় এবং অনলাইন শপিং বা ই-কমার্স যাত্রা শুরু করে । ১৯৯৫ সালে জেফ বেজস শুরু করেন ই-কমার্স জায়ান্ট ‘আমাজন ডটকম’। এ সময় ডেল এবং সিসকো অনলাইন লেনদেন শুরু করে। ১৯৯৬ সালে ভারতে শুরু হয় প্রথম ইন্ডিয়ান ই-কমার্স সাইট ইন্ডিয়ামার্ট। এটি ছিল একটি B2B ই-কমার্স সাইট। ১৯৯৯ সালে যাত্রা শুরু করে চায়নার ই-কমার্স জায়ান্ট আলিবাবা গ্রুপ।

বাংলাদেশের ই-কমার্সের ইতিহাস|History of e-commerce in Bangladesh


১৯৯৯ সালে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করে ই-কমার্স সাইট, নাম মুন্সিজি ডটকম। ২০১১ সালে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশের জনপ্রিয় ই-কমার্স সাইট এখনি ডটকম এবং আজকের ডিল ডটকম। ২০১২ সালে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় ই-কমার্স সাইট রকমারি ডটকম।

২০১৩ সালে বাংলাদেশের ই-কমার্স জগতে তৈরি হয় নতুন দিগন্ত। বাংলাদেশ ব্যাংক, ব্যাসিস ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ই-কমার্সকে জনপ্রিয় করতে শুরু করে বিভিন্ন কর্মসূচি (মেলা, সেমিনার প্রভৃতি)। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের ই-কমার্স খাতের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান হচ্ছে দারাজ। চীনের ই-কমার্স জায়ান্ট আলিবাবা এটি কিনে নিয়েছে। এর পরে যেগুলো আছে তা সবই বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান। যেমন- আজকের ডিল, বাগডুম, প্রিয় শপ, রকমারি, পিকাবু, অথবা প্রভৃতি।

২০১৪ সালে ই-ক্যাব প্রতিষ্ঠা বাংলাদেশের ই-কমার্স ব্যবসাকে আরো ত্বরানিত করে। ২০১৫ সালে বাংলাদেশে ৪০০০ কোটি টাকার ব্যবসা হয় এ খাতে। ভবিষ্যতে ই-কমার্স বাংলাদেশে আরও জনপ্রিয়তা লাভ করবে। কারণ বাংলাদেশের মানুষ এখন অনলাইনে ব্যবহারে অভ্যস্ত। এখন তাদের কাছে ই-কমার্স এর সুবিধা তোলে ধরতে পারলেই সফলতা আসবে।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url