চাহিদা রেখা ডানদিকে নিম্নগামী হওয়ার কারণ
চাহিদা রেখা বামদিক থেকে ডানদিকে নিম্নগামী হওয়ার কারণসমূহ:
চাহিদা রেখা বামদিক থেকে ডানদিকে নিম্নগামী হওয়ার মূল কারণ হলো চাহিদা বিধি। চাহিদা বিধিতে অন্যান্য অবস্থা স্থির থেকে দ্রব্য ও সেবার দামের সাথে চাহিদার পরিমাণের বিপরীত সম্পর্ক নির্দেশ করে। এ সম্পর্কের কারণেই চাহিদা রেখা বাম থেকে ডানদিকে নিম্নগামী হয়। তবে এ সম্পর্কে যেসব কারণ রয়েছে, তা হলো:
১. ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উপযোগ বিধি: এ বিধি অনুযায়ী কোনো দ্রব্যের ভোগ বাড়লে ভোক্তার নিকট তার প্রান্তিক উপযোগ কমতে থাকে এবং এক পর্যায়ে দ্রব্যটির প্রান্তিক উপযোগ দামের সমান হয়। অর্থাৎ দ্রব্যের প্রান্তিক উপযোগ বা দাম হ্রাস পাওয়ার কারণে তার ভোগ বা চাহিদা বাড়ে। আবার দাম বা প্রান্তিক উপযোগ বেশি হলে দ্রব্যের ভোগ বা চাহিদা কম হয়। এজন্য চাহিদা রেখা ডানে নিম্নগামী হয়।
২. আয় প্রভাব: দ্রব্যের দাম কমলে ক্রেতা একই পরিমাণ দ্রব্য ক্রয়ের জন্য আগের চেয়ে কম অর্থ ব্যয় করে। ফলে ক্রেতা তার উদ্বৃত্ত অর্থ দ্বারা অতিরিক্ত দ্রব্য ক্রয় করে। পক্ষান্তরে, দাম বাড়লে ক্রেতার প্রকৃত আয় কমে যাওয়ায় তার চাহিদাও কমে যায়।
৩. পরিবর্তক প্রভাব: ধরি, গুড় ও চিনি দুটি পরিবর্তক দ্রব্য। গুড়ের দাম কমে গেলে ক্রেতা চিনির পরিবর্তে গুড় বেশি ক্রয় করে। এর ফলে সস্তা পণ্যটির চাহিদা বাড়ে। এজন্য দ্রব্যের দাম ও চাহিদার মধ্যে যে বিপরীতমুখী সম্পর্ক সৃষ্টি হয় তা নিম্নগামী চাহিদা রেখার দ্বারাই প্রকাশ পায়।
৪. ক্রয়ক্ষমতা বা সামর্থ্য: কোনো দ্রব্যের দাম বাড়লে তা অনেক ক্রেতার ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যায়। ফলে তার সামগ্রিক চাহিদা কমে। আবার দাম কমলে অনেক ক্রেতা সেটি ক্রয় করতে সমর্থ হয়। এভাবে দাম ও চাহিদার বিপরীতমুখী সম্পর্ক দেখা যায়— যা নিম্নগামী চাহিদা রেখার দ্বারা প্রকাশ হয়।
৫. ঢাল ঋণাত্মক: চাহিদা রেখার ঢাল ঋণাত্মক; ফলে দাম ও চাহিদার পরিমাণের মধ্যে বিপরীতমুখী সম্পর্ক বিদ্যমান। যেমন— কোনো দ্রব্যের দাম ২ টাকা থেকে ৪ টাকায় বৃদ্ধি পেলে, চাহিদার পরিমাণ ৪ একক থেকে হ্রাস পেয়ে ৬ একক হলে, চাহিদা রেখা বামদিক থেকে ডানদিকে নিম্নগামী হয়।