চামড়া শিল্পের সমস্যা
১. ঋণের স্বল্পতা: চামড়া শিল্পের সাথে জড়িত ব্যবসায়ীরা ব্যাংক থেকে সহজ শর্তে ঋণ পায় না। কোরবানির সময় ব্যবসায়ীদের অনেক টাকার প্রয়োজন হয়, কিন্তু প্রায়ই সরকার প্রয়োজনের তুলনায় এ ক্ষেত্রে কম ঋণ বরাদ্দ দিয়ে থাকে।
৮. চামড়া নীতি: চামড়া শিল্পের বিকাশের জন্য যে রকম আকর্ষণীয় নীতি উদ্যোক্তারা আশা করে সে রকম নীতি সরকারের পক্ষ থেকে করা হয়নি।
৯. চামড়া পাচার: প্রতি বছর এ দেশ থেকে চামড়া পার্শ্ববর্তী দেশে পাচার হয়ে যায়। ফলে এদেশের শিল্প কারখানায় চামড়ার অভাব দেখা যায়।
১০. পরিবেশ দূষণ: পরিবেশ দূষণ বর্তমানে একটি জাতীয় সমস্যা। চামড়া শিল্পের জন্য আলাদা কোনো শিল্প নগরী নেই। ফলে এদেশের শহরে, নগরে ও শহরতলীতে এ শিল্প স্থাপন করার ফলে ট্যানারি থেকে নির্গত বজা পরিবেশ দূষণ ঘটাচ্ছে।
২. প্রক্রিয়াজাতকরণের অসুবিধা: চামড়া সঠিকভাবে প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য প্রয়োজনীয় ট্যানারি শিল্প সারা দেশে সমভাবে গড়ে ওঠেনি। ফলে প্রায়ই চামড়া তার গুণগত মান হারায়।
৩. বিদ্যুৎ ঘাটতি: প্রয়োজনীয় বা চাহিদামতো বিদ্যুৎ না পাওয়ায় এ শিল্পের উৎপাদন ব্যাহত হয়। এতে উৎপাদিত পণ্যের পরিমাণ হ্রাস পায়। সাভারে চামড়া শিল্প নগরীতে ১৫৪ টি কারখানার মধ্যে ১২৪ টিতে বিদ্যুৎ দেয়া হয়েছে।
৪. রাসায়নিক শিল্পের স্বল্পতা: চামড়া ও চামড়াজাত দ্রব্য প্রক্রিয়াজাত করার জন্য প্রচুর পরিমাণে রাসায়নিক দ্রব্যের প্রয়োজন হয়। কিন্তু বাংলাদেশে এসব রাসায়নিক দ্রব্যের অভাবে উৎপাদন ব্যাহত হয়।
৫. শ্রমিকদের অদক্ষতা: প্রায়ই চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণে অদক্ষ শ্রমিক নিয়োগ করা হয়। ফলে চামড়ার গুণগত মান নষ্ট হয়।
৬. সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা: সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা উদ্যোক্তাদেরকে চামড়া শিল্পে আকৃষ্ট করতে পারেনি।
৭. সংরক্ষণের অভাব: চামড়া সংরক্ষণের জন্য চামড়ার আড়ৎ থাকা দরকার, যা আমাদের দেশে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।
৮. চামড়া নীতি: চামড়া শিল্পের বিকাশের জন্য যে রকম আকর্ষণীয় নীতি উদ্যোক্তারা আশা করে সে রকম নীতি সরকারের পক্ষ থেকে করা হয়নি।
৯. চামড়া পাচার: প্রতি বছর এ দেশ থেকে চামড়া পার্শ্ববর্তী দেশে পাচার হয়ে যায়। ফলে এদেশের শিল্প কারখানায় চামড়ার অভাব দেখা যায়।
১০. পরিবেশ দূষণ: পরিবেশ দূষণ বর্তমানে একটি জাতীয় সমস্যা। চামড়া শিল্পের জন্য আলাদা কোনো শিল্প নগরী নেই। ফলে এদেশের শহরে, নগরে ও শহরতলীতে এ শিল্প স্থাপন করার ফলে ট্যানারি থেকে নির্গত বজা পরিবেশ দূষণ ঘটাচ্ছে।
১১. চামড়ার দাম হ্রাস: রপ্তানি ভাটার প্রভাব পড়ে কাঁচা চামড়ার দামেও। ২০১৩ সালে প্রতি বর্গফুট গরু। চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল ৮৫ ও ৯০ টাকা। ২০১৯ সালে ধার হয়েছিল ৪৫ ও ৫০ টাকা করে।
চামড়া শিল্পের সমস্যা সমাধানের উপায়
বাংলাদেশের চামড়া শিল্প বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করা যেতে পারে।
১. ঋণের পর্যাপ্ত যোগান: চামড়া শিল্পের জন্য পর্যাপ্ত ঋণের ব্যবস্থা করতে পারলে এবং সেই ঋণ সহজ হলে এ শিল্পের বিকাশ ঘটবে।
২. বিদ্যুতের সংযোগ: চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুতের সরবরাহ নিশ্চিত করলে এ শিল্পের সমস্যার সমাধান হবে।
৩. রাসায়নিক দ্রব্যের পর্যাপ্ততা: প্রয়োজনীয় রাসায়নিক দ্রব্যের সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারলে এ শিল্প আলোর মুখ দেখতে পারবে।
৪. সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা: বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্টের জন্য সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা অধিক প্রয়োজন।
৫. পাচার রোধ: দেশের বাইরে যেন চামড়া পাচার না হতে পারে সে দিকে সকলকে খেয়াল রাখতে হবে।
৬. বিদেশে বাজার সৃষ্টি: বিদেশে বাজার সৃষ্টি করার জন্য দেশীয় বিনিয়োগকারীদের ও সরকারের কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করতে হবে।
৭. ট্যানারি শিল্প স্থাপন: দেশে আরও বেশি ট্যানারি শিল্প স্থাপনের উদ্যোগ নিতে হবে।
৮. চামড়া নীতি: চামড়া শিল্পের বিকাশের জন্য সঠিক চামড়া নীতি প্রণয়ন করতে হবে। চামড়া নীতিতে চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করে দিতে হবে।
৯. পৃথক ট্যানারি বা শিল্প নগরী স্থাপন: বাংলাদেশে ট্যানারি শিল্পের উন্নয়নের জন্য সুপরিসর স্থানে একটি পৃথক শিল্পনগরী স্থাপন করতে হবে।
উপরের পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করলে বাংলাদেশের চামড়া শিল্প রপ্তানি আয়ে যথেষ্ট অবদান রাখতে সক্ষম হবে।