প্রতিজ্ঞাপত্রের বৈশিষ্ট্য

প্রতিজ্ঞাপত্ৰ আইনানুগভাবে স্বীকৃত হস্তান্তরযোগ্য দলিল। অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যে বা যেকোনো ধরনের পাওনা নিষ্পত্তিতে প্রতিজ্ঞাপত্ৰ ব্যবহার করা হয়। আইনানুগভাবে এবং প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী প্রতিজ্ঞাপত্রের কিছু বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। নিম্নে প্রতিজ্ঞাপত্রের বৈশিষ্ট্যগুলো আলোচনা করা হলো।

১. লিখিত (Written): যেকোনো হস্তান্তরযোগ্য দলিলকে আইন বলবৎযোগ্য হতে হলে তা অবশ্যই লিখিত হতে হবে। প্রতিজ্ঞাপত্রও অবশ্যই লিখিত হবে। অন্যথায় তা আইনসম্মত হবে না।

২. শর্তহীন (Unconditional): প্রতিজ্ঞাপত্রের মাধ্যমে দেনাদার অর্থ প্রদানের শর্তহীন প্রতিশ্রুতি প্রদান করে।

৩. স্বাক্ষরিত (Signed): প্রতিমাপত্র দেনাদার কর্তৃক প্রস্তুতকৃত ও স্বাক্ষরিত হতে হবে। অন্যথায় তা আইনসম্মত হবে না।

৪. নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ (Specified sum): প্রতিজ্ঞাপত্র অবশ্যই নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থের জন্য প্রস্তুত করা হয়।

৫. নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে অর্থ পরিশোধ (Payment of sum of cheque to a certain person): প্রতিজ্ঞাপত্রের অর্থ পাওনাদারকে বা তার আদেশে অন্য কোনো ব্যক্তিকে পরিশোধ করা হয়।

৬. চাওয়ামাত্র পরিশোধ (Payable or demand): প্রতিজ্ঞাপত্রের অর্থ চাওয়ামাত্র পরিশোধ্য। তবে মেয়াদি প্রতিজ্ঞাপত্রের অর্থ মেয়াদ শেষে পরিশোধ করা হয়।

৭. নির্দিষ্ট তারিখ (Dated): প্রতিজ্ঞাপত্রে তারিখ উল্লেখ করতে হয়। পরিশোধের তারিখও এতে উল্লেখ করা হতে পারে।

৮. পক্ষসমূহ (Parties): প্রতিজ্ঞাপত্রে দুটি পক্ষ থাকে। যথা: প্রস্তুতকারক (দেনাদার) ও প্রাপক (পাওনাদার)।

৯. নির্দিষ্ট মুদ্রা (Certain currency): প্রতিজ্ঞাপত্রের অর্থ নির্দিষ্ট মুদ্রায় পরিশোধ করা হয়।

১০. হস্তান্তরযোগ্য (Negotiable): হস্তান্তরযোগ্য দলিল আইন অনুসারে প্রতিজ্ঞাপত্র হস্তান্তরযোগ্য ঋণের দলিল। অনুমোদনক্রমে অর্পণের মাধ্যমে প্রতিজ্ঞাপত্র হস্তান্তর করা যায়।

১১. স্ট্যাম্প (Stamp): প্রতিজ্ঞাপত্রে স্ট্যাম্প সংযোজন বাধ্যতামূলক। প্রতিজ্ঞাপত্রের অর্থের পরিমাণ অনুযায়ী নির্দিষ্ট মূল্যের স্ট্যাম্প যুক্ত করতে হয়।

পরিশেষে বলা যায়, প্রতিজ্ঞাপত্রের মর্যাদা বা মূল্য অর্জনে উপরিউক্ত বৈশিষ্ট্যগুলোকে আবশ্যিক শর্ত হিসেবে গণ্য করা হয়। এটি আইনসম্মত ঋণের দলিল। এ ধরনের দলিলে উপর্যুক্ত বৈশিষ্ট্যাবলি থাকা আবশ্যক।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url