বাংলাদেশের সেবা খাতের প্রবৃদ্ধি
উৎপাদনের দু'টি খাত। যাদের একটি হলো পণ্য খাত এবং অন্যটি হলো সেবা খাত। উৎপাদনের ক্ষেত্রে পূর্বে পণ্য খাতকে গুরুত্ব দিলেও সেবা খাতকে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হত না। পণ্য খাতের উন্নয়নের জন্য চিন্তা ভাবনা, প্রচার, গবেষণা ইত্যাদি করা হলেও সেবা খাতের উন্নয়নে তেমন কিছু করা হয়নি।
সম্প্রতি আমাদের দেশে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে নানান ধরনের পণ্য উৎপাদনের জন্য বিভিন্ন প্রকার কলকারখানা ও শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলেও সেবা খাতের প্রবৃদ্ধি তেমন একটা হয়নি। তবে প্রযুক্তির উন্নয়ন ও জনগণের চাহিদা বৃদ্ধির কারণে ক্রমান্বয়ে সেবা খাতের ব্যাপক উন্নতি সাধিত হচ্ছে।
বর্তমানে এদেশে টেলিযোগাযোগ খাত, স্বাস্থ্যখাত, শিক্ষাঘাত, পরিবহনখাত, আমদানি - রপ্তানি খাত, হোটেল ও পর্যটনখাত ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয়েছে। এ সকল খাতের বর্ণনা নিয়ে দেওয়া হলো:
১. টেলিযোগাযোগ খাত (Telecommunication sector): সরকারি এবং বেসরকারি মালিকানায় রয়েছে দেশের অন্যতম টেলিযোগাযোগ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ। সরকারি মালিকানায় রয়েছে প্যান্ড ফোন এবং মোবাইল ফোন। তাছাড়া বেসরকারি অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলে মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করেছে। গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি গ্রাম মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কের আওতায় এসেছে। প্যান্ড ফোনের ক্ষেত্রেও বর্তমানে অনেকগুলো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে। কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগের সাথে সাথে এ প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের কর্মসংস্থানে রাখছে বিশেষ ভূমিকা। তাছাড়া অবকাঠামোগত উন্নয়নেও এদের ভূমিকা বিশাল। এ প্রতিষ্ঠানগুলো আধুনিক পন্থায় সেবার ডিজাইন করছে এবং একই সাথে গ্রাহক সেবার ক্ষেত্রে রাখছে বিশাল অবদান। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, মোবাইল ফোন প্রতিষ্ঠানগুলো টেক্সট মেসেজ, ইন্টারনেট, ভয়েস মেসেজ, নিউজ সার্ভিসসহ বিভিন্ন উন্নত সেবা চালু করেছে। ফলে জনসাধারণ পাচ্ছে উন্নত যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ। এ সুবিধাগুলো মানুষকে একে অপরের কাছাকাছি এনে দিয়েছে।
২. শিক্ষাখাত (Education sectors): বাংলাদেশের অন্যতম একটি সেবা খাত হলো শিক্ষা। স্বাধীনতা পরবর্তী কালে এদেশে হাতে গোনা কয়েকটি সরকারি পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় এবং জেলা শহরগুলোতে কিছু কলেজ ছিল। তাছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল হাতে গোনা কিছু স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মক্তব ইত্যাদি। বর্তমানে এদেশে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়ে অসংখ্য স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হতে বহু শিক্ষার্থী বড় বড় ডিগ্রি নিয়ে বের হয়ে দেশ - বিদেশের বিভিন্ন স্থানে তাদের যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখে চলেছে। এক কথায় বলা যায়, যে কোনো খাতের চেয়ে শিক্ষাখাত বাংলাদেশের একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ খাত, যেখান হতে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি সংখ্যক দক্ষ জনশক্তি প্রতিবছর বের হয়ে যাচ্ছে।
৩. স্বাস্থ্যখাত (Health sectors): মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলোর মধ্যে স্বাস্থ্য অন্যতম। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থানের পরেই স্বাস্থ্যের অবস্থান। পূর্বে সরকারি পর্যায়ে বড় বড় মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল থাকলেও বর্তমানে বেসরকারি পর্যায়ে ছোট - বড় অনেক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এসকল কলেজে একদিকে যেমন হাজার হাজার শিক্ষার্থী পড়াশুনা করছে, অন্যদিকে তেমন হাসপাতালগুলোতে স্বাস্থ্য সেবা নিচ্ছে অগণিত মানুষ। আমাদের দেশের অধিকাংশ সরকারি এবং বেশ কিছু বেসরকারি শাসপাতাল আন্তর্জাতিক মানের। এসকল হাসপাতালে একদিকে যেমন রুগীরা আন্তর্জাতিক মানের সেবা পাচ্ছে, অন্যদিকে তেমন রক্ষা পাচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রার বহির্গমন। বর্তমানে সরকার এ খাতটিকে ব্যাপক গুরুত্ব দিয়ে এর আধুনিকায়নের দিকে নজর দিচ্ছে।
৪. পর্যটন সেবাখাত (Tourism service sector): বর্তমানে যতগুলো খাত বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে, তাদের মধ্যে পর্যটন সেবাখাত অন্যতম। এদেশে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান, আছে পাহাড় - পর্বত, আছে পৃথিবীর বৃহত্তম সমূদ্র সৈকত, আছে ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন, আছে হাওড় বাওড়, বড় বড় সেতু, পীর - আওলিয়ার মাজারসহ আরো কত কি! পূর্বে এদেশের মানুষ বিনোদন হিসেবে ভ্রমণকে বেছে না নিলেও বর্তমানে ভ্রমণকে বিনোদনের একটি অন্যতম মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করেছে। তাছাড়া এ সকল দর্শনীয় স্থান উপভোগ করার জন্য প্রতি বছর বিদেশী পর্যটকগণও এদেশে আসছে। বর্তমানে পর্যটনকে ঘিরে কক্সবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক মানের বেশ কিছু হোটেল, মোটেল, শপিংমল ইত্যাদি। এ খাত হতে অভ্যন্তরীণ আয়সহ অর্জিত হচ্ছে প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মূদ্রা। তবে এ খাতকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে হলে সরকারিখাতসহ বেসরকারি উদ্যোক্তাদের আরো আন্তরিক হতে হবে।
৫. আমদানি - রপ্তানি খাত (Export - import sectors): মুক্ত বাজার অর্থনীতির এযুগে আমদানি - রপ্তানি খাতের প্রবৃদ্ধি যে কোনো দেশের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ষোল কোটি মানুষের এদেশে একদিকে যেমন প্রচুর পরিমাণে দ্রব্যসামগ্রী আমদানি করতে হয়, অন্যদিকে তেমনি গার্মেন্টস, চামড়াজাত পণ্য, চা, চিংড়িসহ নানান ধরনের পণ্য বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। এসকল আমদানি - রপ্তানি বাণিজ্যের সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত আছে হাজার হাজার মানুষ ও প্রতিষ্ঠান। এখাতে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন তাদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে, সেই সাথে সেবা দিয়ে যাচ্ছে বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরত আছে বিপুল সংখ্যক মানুষ। তাছাড়া অবস্থানগত সুবিধার কারণে পার্শ্ববর্তী দেশসমূহ এদেশকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করে তাদের দেশের আমদানি - রপ্তানি ব্যবসায় পরিচালনা করছে, ফলে এ খাত হতে আমাদের দেশে প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মূদ্রা অর্জিত হচ্ছে।
৬. পরিবহন সেবাখাত (Transport service sector): বাংলাদেশে পরিবহন সেবার ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সফলতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সারাদেশ এখন পরিবহন নেটওয়ার্কের আওতায় এসেছে। পরিবহনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সরকারি সংস্থার পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহ কাজ করে যাচ্ছে। যদিও বাংলাদেশ রেলওয়ে রেল পরিবহনের ক্ষেত্রে একমাত্র সংস্থা, তবুও সড়ক পথ, নৌপথ ও আকাশ পথে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থার ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। এদেশে এখন প্রায় প্রতিটি গ্রামে সড়ক পথে পৌঁছে যাওয়া যায়। নদীর নাব্যতা কমে যাওয়ায় যদিও নৌপথের আয়তন সীমিত হয়ে পড়ছে তার পরেও দক্ষিণাঞ্চলের সাথে রাজধানীর যোগাযোগে এ পথের গুরুত্ব কোনো অংশে কম নয়। আবার আন্তর্জাতিক পণ্য পরিবহনের সিংহভাগ নৌপথেই সম্পাদিত হয়। তাছাড়া আকাশ পথের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটে সরকারি বিমান সংস্থার পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোও কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে পণ্য পরিবহন, যাত্রী পরিবহন, পার্সেল পরিবহনসহ অন্যান্য সেবা প্রদানে বাংলাদেশের এ খাতটি ব্যাপক উন্নতিসাধন করেছে।
৭. বিনোদন সেবাখাত (Amusement service sector): পূর্বে বিনোদন বলতে গ্রামে - গঞ্জে বায়োস্কোপ, সার্কাস, যাত্রা, জারি গান, কবি গান, মেলা, লাঠি খেলা ইত্যাদি এবং শহরের প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শিত সিনেমা এবং নাট্য মঞ্চে প্রদর্শিত নাটকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। অতি সম্প্রতি বাংলাদেশে বিনোদন সেবার বিকাশ ঘটছে। অতীতে সরকারি পর্যায়ে সীমিত আকারে বিনোদন সেবা প্রদান করা হত। বর্তমানে বেসরকারি পর্যায়ে থিমপার্ক, গেমপার্ক, ওয়ান্ডার ল্যান্ড, ফ্যান্টাসি কিংডম, নন্দন পার্ক, শিশুপার্ক, ফয়জ'স লেক প্রভৃতি আন্তর্জাতিক মানের বিনোদন সেবা প্রদান করে যাচ্ছে। তাছাড়া ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার কারণে বর্তমানে ঘরে বসে নাটক, সিনেমা, মেগা সিরিয়ালসহ নানান ধরনের শিক্ষা ও বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান উপভোগ করা সম্ভব হচ্ছে। এসকল খাত হতে সরকার পাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব।
৮. ব্যাংকিং সেবাখাত (Banking service sector): বাংলাদেশে ব্যাংকিং খাতের সেবা এখন আন্তর্জাতিক মানের। স্বাধীনতার পর এদেশে হাতে গোনা কয়েকটি সরকারি ব্যাংক এ খাতে সেবাদানে নিয়োজিত ছিল। তখন সেবার মান ছিল গতানুগতিক। পরবর্তী পর্যায়ে সরকারি ব্যাংকের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তাগণ এ যাতে এগিয়ে আসে। ফলে সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে এখাতটি এখন আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হয়েছে। দেশীয় ব্যাংকের পাশাপাশি এদেশে বর্তমানে অনেকগুলো বিদেশি ও আন্তর্জাতিক ব্যাংক কর্মরত আছে। আধুনিক সমাজে গ্রাহক সেবাদানের ক্ষেত্রে এদেশের সকল ব্যাংক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। বর্তমানে অনলাইন ব্যাংকিং, ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, এটিএম মেশিনে ২৪ ঘণ্টা টাকা উত্তোলন, ফার্স্ট ট্রাকের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা অর্থ উত্তোলন ও জমাদান, মোবাইল ব্যাংকিং, সহজ শর্তে ঋণ প্রদান, ব্যবসায় পরামর্শ, দ্রুততার সাথে আন্তর্জাতিক লেনদেন নিষ্পত্তি ইত্যাদির ফলে ব্যাংকের প্রতি মানুষের আস্থা বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাছাড়া ব্যবসায় স্থাপন ও পরিচালনার ক্ষেত্রে ব্যাংক ব্যাপক ভূমিকা রাখছে।
৯. ডাক বিভাগ (Postal service): বাংলাদেশে ডাক বিভাগ একটি গুরুত্বপূর্ণ সেবাখাত। এদেশে ডাক বিভাগের ইতিহাস বেশ পুরাতন। ডাক সেবার ক্ষেত্রে এ দেশে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান নিয়োজিত আছে। তারা দেশী ও বিদেশী অন্যান্য ডাক সেবাদানকারী সংস্থার সহায়তায় এ সেবাটিকে জনগণের ঘৌড় গোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছে। বাংলাদেশ ডাক বিভাগ এদেশের একমাত্র সরকারি ডাক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়াও DHL, Fedex, UPS, সুন্দরবন, কন্টিনেন্টাল ইত্যাদি বেসরকারি কুমিরার প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের মধ্যে এবং দেশের বাইরে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস, পণ্যসামগ্রী এবং অর্থ আনা - নেওয়া করে এ খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। বর্তমানে “এসএ পরিবহন” নামের একটি বেসরকারি পরিবহন সংস্থাও সীমিত পরিসরে একাজগুলো করে যাচ্ছে।
১০. বিদ্যুৎ খাত (Electricity sector): বিদ্যুৎ হলো এমন একটি সম্পদ যা ছাড়া অর্থনীতির সকল খাত অসার হয়ে পড়ে। এ খাতটি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অর্থনীতির সকল খাতকে প্রভাবিত করে। আমাদের দেশে চাহিদার তুলনায় বিদ্যুতের উৎপাদন অনেক কম, ফলে বিদ্যুতের ঘাটতি থাকছে অনেক। বর্তমানে বেসরকারি পর্যায়ে নগণ্য পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপন্ন হলেও সিংহভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে সরকারিভাবে। তবে বিদ্যুতের বিতরণ পুরোটাই সরকারের হাতে ন্যস্ত। ডেসা, ডেসকো, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানগুলো স্বায়িত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের অধিকার লাভ করে গ্রাহকদের মাঝে বিদ্যুৎ বিতরণ করে যাচ্ছে। এ খাতটি অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলেও স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। তবে পাবনা জেলার অন্তর্গত ইশ্বরদীর রূপপুরে অবস্থিত আণবিক শক্তির সাহায্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটি দ্রুত গতিতে সমাপ্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এটি চালু হলে হয়তো এ খাতটি স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে সক্ষম হবে। সরকারের বর্তমান কর্মকাণ্ডে মনে হচ্ছে অচিরেই এ কেন্দ্রটি চালু হবে।
১১. সমাজ সেবাখাত (Social service sector): বাংলাদেশে বর্তমানে প্রচুর সংখ্যক সম উঠেছে। এগুলোর মূল কাজ হলো বিভিন্ন বিষয়ে জনগণকে সচেতন করে তোলা। এদেশে বিভিন্ন এনজিও, বিভিন্ন সংস্থা, জনকল্যাণমূলক সমিতিসহ বিভিন্ন সংস্থা কাজ করে সমাজ সেবাখাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। আধুনিক এমনই একটি সংস্থা যারা ধূমপান বিরোধী প্রচারে নিজেদের নিয়োজিত রেখেছে। আবার ‘বেলা’ নামের একটি সংস্থা আছে, যাদের কাজ হলো পরিবেশ দূষণ রোধে কাজ করে যাওয়া। এভাবে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন, বুড়িগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলন, শিশু ও মাতৃ অধিকার, শিশু শ্রম প্রতিরোধ, যৌতুক বিরোধী আপোলনসহ নানান ধরনের সমাজ সেবামূলক সংস্থা আছে যাদের কাজ হলো সামগ্রিকভাবে এদেশের জনগণকে সচেতন করে তোলা সেবাখাত গড়ে তোলা।
১২. অন্যান্য খাত (Other sectors): উপরোক্ত সেবা খাতগুলো ছাড়াও এদেশে বহু সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান আছে যারা ব্যবসায়ের সহায়ক সেবা প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এগুলো হলো- রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (Export Promotion Bureau), রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা (Export Processing Zone), ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (Trading Corporation of Bangladesh), বিসিক, বিনিয়োগ বোর্ড ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানসমূহ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানকে নানান ধরনের সেবা প্রদান করে যাচ্ছে। তাছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আছে যারা বিজ্ঞাপন, বাজার গবেষণা, পণ্য গবেষণা ইত্যাদি কাজে নিজেদেরকে নিয়োজিত রেখে এদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য তথা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে।