খাজনা কেন দেওয়া হয়?
খাজনার সংজ্ঞা থেকেই খাজনার উদ্ভবের কারণ পাওয়া যায়। বিভিন্ন কারণে খাজনা দেওয়া হয়। এগুলো নিচে আলোচনা করা হলো:
১. অস্থিতিস্থাপক যোগান: অস্থিতিস্থাপক যোগান হলো, যে উপকরণের যোগান বৃদ্ধি পায় না। ফলে চাহিদা বাড়লে, কোনো উপকরণের যোগান অস্থিতিস্থাপক হলে সর্বনিম্ন যোগান দামের চেয়ে অতিরিক্ত অর্থ উপার্জন করে। যেমন- জমির যোগান অস্থিতিস্থাপক বা সীমাবদ্ধ। এজন্য জমির চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় জমির মালিককে জমি ব্যবহারের জন্য অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করতে হয়।
২. জমির উর্বরতার পার্থক্য: রিকার্ডোর মতে, জমির উর্বরা শক্তির পার্থক্যের কারণে খাজনার উদ্ভব হয়। তার মতে, প্রান্তিক জমির কোনো খাজনা নেই। উৎকৃষ্ট জমিতে উৎপাদন খরচের চেয়ে আয় বেশি বলে তার মালিককে খাজনা দিতে হয়।
৩. জমির অবস্থানগত পার্থক্য: জমির অবস্থানগত পার্থক্যের কারণেও খাজনার উদ্ভব হয়। শহর, নগর, বন্দর বা বাজারের নিকটবর্তী জমির খাজনা দূরবর্তী জমি অপেক্ষা খাজনার পরিমাণ বেশি হয়। কেননা শহরের নিকটবর্তী জমির চাহিদা বেশি বলে দূরবর্তী জমি অপেক্ষা অতিরিক্ত আয় অর্জন করে।
৪. সীমাবদ্ধ যোগান: যে সকল উপকরণের যোগান সাময়িকভাবে সীমাবদ্ধ সে সকল উপকরণের চাহিদা বৃদ্ধির কারণে অতিরিক্ত খাজনা দিতে হয়।
৫. ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উৎপাদন বিধির কার্যকারিতা: একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ জমিতে অধিক পরিমাণে শ্রম ও মূলধনের নিয়োগ বাড়াতে থাকলে, প্রাথমিক অবস্থায় মোট উৎপাদন ক্রমবর্ধমান হারে বাড়লেও পরবর্তীতে ক্রমহ্রাসমান হারে কমে। অপরদিকে, জমির পরিমাণ বাড়ানো যায় না বলে অতিরিক্ত উৎপাদনের জন্য জমির চাহিদা বাড়ে। ফলে জমির খাজনা দিতে হয়।
৬. জমির বিকল্প ব্যবহার: একই জমি বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা যায়। কোনো জমিতে ধান চাষের পরিবর্তে সবজি চাষ করলে উৎপাদন খরচের চেয়ে বেশি উদ্বৃত্ত থাকে। এক্ষেত্রে সবজি চাষের জন্য খাজনা দিতে হয়। সুতরাং জমির সীমাবদ্ধ যোগান, অবস্থানগত পার্থক্য এবং উর্বরা শক্তির পার্থক্যের কারণে খাজনার উদ্ভব হয়।