এইচ.এস.সি অর্থনীতি ২য় পত্র ৮ম অধ্যায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্য

আন্তর্জাতিক বাণিজ্য জ্ঞানমূলক প্রশ্ন


১. অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য কী?
উত্তর: দেশীয় সীমানার ভিতরে সাধারণত একই দেশের অধিবাসী এবং একই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে দ্রব্যসামগ্রী ও সেবার বিনিময়কে অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য বলে।

২. আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কী?
উত্তর: দুই বা ততোধিক সার্বভৌম দেশের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী , দ্রব্য ও সেবার বিনিময়কে আন্তর্জাতিক বা বৈদেশিক বাণিজ্য বলে।

৩. তুলনামূলক খরচ তত্ত্বের জনক কে? 
উত্তর: ডেভিড রিকার্ডোতুলনামূলক খরচ তত্ত্বের জনক।

৪. অবাধ বাণিজ্য কী? 
উত্তর: আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যদি কোনরূপ বিধি- নিষেধ (শুল্ক, কোটা প্রভৃতি) না থাকে তাকে অবাধ বাণিজ্য বলে।

৫,. সরকার কোন সালে ‘ওয়েজ আর্নার্স স্কিম’ চালু করে? 
উত্তর: সরকার ১৯৭৫ সালে ‘ওয়েজ আর্নার্স স্কিম’ চালু করে।

৬. লেনদেন ভারসাম্য কী?
উত্তর: কোনো নির্দিষ্ট সময়ে (সাধারণত এক বছরে) একটি দেশের আমদানি রপ্তানি ও অন্যান্য অর্থনৈতিক লেনদেন সংক্রান্ত মোট পাওনা ও মোট দেনার ধারাবাহিক হিসাবকেই লেনদেনের ভারসাম্য বলা হয়।

৭. কোন সালে সরকার ‘ওয়েজ আর্নার স্কিম’ চালু করে? 
উত্তর: ১৯৭৫ সালে সরকার ‘ওয়েজ আর্নার স্কিম’ চালু করে।

৮. প্রচলিত পণ্য কী? 
উত্তর: যেসব পণ্য সুদীর্ঘকালব্যাপী কোনো দেশ বিদেশে রপ্তানি করে আসছে সেগুলোকে ঐ দেশের প্রচলিত পণ্য বলা হয়।

৯. অপ্রচলিত পণ্য কী?
উত্তর: সাম্প্রতিককালে যেসব পণ্য কোনো দেশের রপ্তানি বাণিজ্যে সংযোজিত হয়েছে বা প্রাধান্য পেয়েছে সেগুলোকে ঐ দেশের অপ্রচলিত পণ্য বলা হয়।

১০. আমদানি কী? 
উত্তর: যে প্রক্রিয়ায় একটি দেশ অন্যদেশের পণ্য ও সেবা ক্রয় করে তাকে আমদানি বলে।

১১. বাংলাদেশের প্রধান প্রধান রপ্তানি পণ্যকে কয় ভাগে ভাগ করা যায়? 
উত্তর: বাংলাদেশের প্রধান প্রধান রপ্তানি পণাকে দুভাগে ভাগ করা যায়।

১২. বাংলাদেশের কয়েকটি আমদানি দ্রব্যের নাম দেখো।
উত্তর: বাংলাদেশের প্রধান প্রধান আমদানি দ্রব্যসামগ্রী হলো- ভোজ্য তেল, গম, অপরিশোধিত পেট্রোলিয়াম, সার, রিংকার, সুতা, ভারী যন্ত্রপাতি, লৌহ, ইস্পাত, কৃষি যন্ত্রপাতি, রেলওয়ে ইঞ্জিন, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, খনিজ দ্রব্য প্রভৃতি।

১৩. রপ্তানি কী? 
উত্তর: দেশের কোনো দ্রব্য যখন দেশের বাইরে অর্থের বিনিময়ে প্রদান করা হয়, তখন তাকে রপ্তানি বলে।

১৪. রপ্তানি বাণিজ্য কাকে বলে? 
উত্তর: যে প্রক্রিয়ায় একটি দেশ অন্য দেশে পণ্য ও সেবা বিক্রি করে তাকে রপ্তানি বাণিজ্য বলে।

১৫. সংরক্ষিত বাণিজ্য কী? 
উত্তর: আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যদি বিধি - নিষেধ (শুল্ক, কোটা, নিষেধাজ্ঞা প্রভৃতি) থাকে তাকে সংরক্ষিত বাণিজ্য বলে।

১৬. প্রতিকূল বাণিজ্যের ভারসাম্য কাকে বলে? 
উত্তর: কোনো নির্দিষ্ট সময়ে যখন আমদানি মূল্য রপ্তানি মূল্য অপেক্ষা বেশি হয়। তখন তাকে প্রতিকূল বাণিজ্যের ভারসাম্য বলে।

১৭. রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো কী? 
উত্তর: রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো হলো, দেশের রপ্তানি বাণিজ্যের উন্নয়নে একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, যার মূল লক্ষ্য হলো রপ্তানি বাণিজ্যের সম্প্রসারণ করা।

১৮. বিশ্বায়ন কী? 
উত্তর: বিশ্বায়ন হচ্ছে মূলধনসহ পণ্য ও সেবার অবাধ প্রবাহের একটি সম্মিলিত ব্যবস্থা।

১৯. বিশ্বায়ন শব্দটির উদ্ভব কোন সময় থেকে? 
উত্তর: বিশ্বায়ন শব্দটি পৃথিবীতে প্রথম শুরু হয় ষাটের দশকে।

২০. বৈদেশিক সাহায্য কাকে বলে? 
উত্তর: কোনো দেশ অর্থনৈতিক উন্নয়নের উদ্দেশ্যে বিদেশ থেকে যে ঋণ ও অনুদান গ্রহণ করে তাকেই বৈদেশিক সাহায্য বলা হয়।

২১. অর্থ সাহায্য কী? 
উত্তর: দাতা দেশসমূহ যদি অর্থের আকারে সাহায্য প্রদান করে থাকে তাহলে তাকে অর্থ সাহায্য বলা হয়।

২২. প্রকল্প সাহায্য কী? 
উত্তর: দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যে সাহায্য গ্রহণ বা প্রদান করা হয় তাকে প্রকল্প সাহায্য বলে।

২৩. Foreign Grant কী? 
উত্তর: যখন বৈদেশিক সাহায্য তহীন হয় এবং পরিশোধ করার প্রয়োজন হ্যা না তখন তাকে Foreign Grant বলে।

আন্তর্জাতিক বাণিজ্য অনুধাবনমূলক প্রশ্ন 


১. দুটি দেশের মধ্যে বাণিজ্য সংঘটিত হয় কেন? 
উত্তর: প্রাকৃতিক সম্পদ প্রাপ্তি, ভৌগোলিক অবস্থান ও জলবায়ুগত পার্থক্য ইত্যাদির কারণে দুটি দেশের মধ্যে বাণিজ্য সংঘটিত হয়। দ্রব্য উৎপাদনের উপকরণ প্রাপ্তি, ভৌগোলিক অবস্থান, জলবায়, তথ্যপ্রযুক্তি ইত্যাদি কারণে কোনো দেশ কোনো একটি দ্রব্য উৎপাদন সুবিধা ভোগ করতে পারে। এতে দ্রব্যটির প্রাচুর্য দেখা দেবে। আবার একই কারণে অন্য কোনো দেশ ওই বিশেষ দ্রব্যটি উৎপাদনে অসুবিধার সম্মুখীন হতে পারে। ফলে দ্রব্যটি কম উৎপাদন হবে অথচ চাহিদা অধিক থাকবে। সুতরাং, ২য় দেশটি ১ম দেশ থেকে দ্রব্যটি আমদানি করবে। এভাবে দেশ দুটির মধ্যে বাণিজ্য সংঘটিত হবে।

২. আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের কয়টি দিক রয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের দুটি দিক রয়েছে। যথা: রপ্তানি বাণিজ্য, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কোনো দেশ যদি অন্যদেশে দ্রব্যসামগ্রী বিক্রি করে তাকে রপ্তানি বাণিজ্য বলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কোনো দেশ যদি অন্যদেশ থেকে দ্রব্যসামগ্রী জয় করে তাকে আমদানি বাণিজ্য বলে।

৩. কেন আমদানি করতে হয়?
উত্তর: চাহিদার তুলনায় উৎপাদিত পণ্যের পরিমাণ কম হলে তখন আমদানি করতে হয়। কোন দেশ বা দেশের ব্যবসায়ী বিদেশ থেকে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময়ে পণ্য সামগ্রী দেশের অভ্যন্তরে বিক্রয়ের উদ্দেশে ক্রয় করে আনলে তখন তাকে বলা হয় আমদানি (Import)। কোনো দেশ যখন তার জনগণের জন্য প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য, শিল্পের কাঁচামাল ও মূলধনী দ্রব্য নিজে উৎপাদন করতে পারে না বা প্রয়োজনের তুলনায় কম উৎপাদন করে তখন তাকে বিদেশ থেকে সেই পণ্য দ্রব্য আমদানি করে প্রয়োজন মেটাতে হয়।

৪. ‘বাণিজ্য না হওয়ার চেয়ে কিছু বাণিজ্য ভালো।’- ব্যাখ্যা করো। 
উত্তর: একেবারে কোনোধরণের বাণিজ্য না হওয়ার চেয়ে অন্ততপক্ষে কিছু বাণিজ্য সংঘটিত হওয়া একটি দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তুলনামূলক ব্যয়নীতির ভিত্তিতে যে দেশ যে পণ্য উৎপাদনে আপেক্ষিক সুবিধা পায়, সে দেশ সেই পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানি করবে। আর যে পণ্য উৎপাদনে আপেক্ষিক সুবিধা কম সেই পণ্য আমদানি করবে। এভাবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্পন্ন হয়। আর বাণিজ্য না হলে বাধ্য হয়ে বেশি খরচে পণ্যটি উৎপাদন করতে হয়। এতে সম্পদের অপচয় হয়। তাই বলা যায়, একেবারে বাণিজ্য না হওয়ার চেয়ে কিছু বাণিজ্য হওয়া ভালো।

৫. আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংঘটিত হওয়ার ২ টি কারণ লেখো।
উত্তর: আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংঘটিত হওয়ার ২ টি কারণ হলো— প্রথমত, বিশ্বের কোনো দেশের পক্ষেই প্রয়োজনীয় সব দ্রব্য ও সেবা উৎপাদন করা সম্ভব হয় না। ফলে বিভিন্ন প্রকার প্রয়োজনীয় দ্রব্য ও সেবার জন্য একদেশ অন্যদেশের ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকে। দ্বিতীয়ত, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে প্রাকৃতিক সম্পদের পার্থক্য হেতু কোনো বিশেষ দেশ, বিশেষ পণ্য উৎপাদনে আপেক্ষিক সুবিধা ভোগ করতে পারে। আপেক্ষিক সুবিধা অনুযায়ী, কোনো বিশেষ দ্রব্য উৎপাদন ও রপ্তানি করে থাকে এবং আপেক্ষিকভাবে যা উৎপাদনে অসুবিধা তা আমদানি করে।

৬. উদ্বৃত্ত পণ্য আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ভিত্তি— ব্যাখ্যা করো। 
উত্তর: উদ্বৃত্ত পণ্যই আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ভিত্তি। কোনো দেশ তার ভৌগোলিক অবস্থান, জলবায়ু, প্রাকৃতিক সম্পদের প্রাচুর্য ইত্যাদির জন্য নির্দিষ্ট কিছু পণ্য উৎপাদনে আপেক্ষিক সুবিধা ভোগ করে। ফলে দেশটি যে দ্রব্য বেশি উৎপাদন করে তার উদ্বৃত্ত অংশ বিদেশে রপ্তানি করে। বিনিময়ে সেই দেশ অন্য কোনো দেশ থেকে তার প্রয়োজনীয় অন্যান্য দ্রব্য আমদানি করে। যেমন- বাংলাদেশ তার উৎপাদিত তৈরি পোশাক নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে এবং এর বিনিময়ে তৈরি। পোশাক শিল্পের কাঁচামাল বিভিন্ন শিল্পপ্রধান দেশ থেকে আমদানি করে। সুতরাং বলা যায়, উদ্বৃত্ত পণ্যই আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ভিত্তি রপ্তানি বাণিজ্য সম্প্রসারণের উপায়।

৭. রপ্তানি প্রণোদনা বলতে কী বোঝ?
উত্তর: রপ্তানি উন্নয়নের জন্য রপ্তানিকারক শিল্পকে কর সুবিধা, সল্প সুদে ঋণ প্রদান, শুল্কবিহীন কাঁচামাল আমদানির সুযোগ প্রদান ইত্যাদি হলো রপ্তানি প্রণোদনা। রপ্তানি উন্নয়নের জন্য সরকার কর্তৃক রপ্তানিকারকদের প্রকৃত সুযোগ - সুবিধা হলো রপ্তানি প্রণোদনা। এটি সরকারি কিংবা বেসরকারি উভয় রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানই পেতে পারে।

৮. বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধির দুটি উপায় লেখো।
উত্তর: বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধির দুটি উপায় হলো উৎপাদন বৃদ্ধি ও রপ্তানি পণ্যের মনোন্নয়ন করা। উৎপাদন বৃদ্ধি বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য প্রথম ও প্রধান উপায় হলো রপ্তানিযোগ্য দ্রব্যসামগ্রীর উৎপাদনের পরিমাণ বাড়ানো। রপ্তানিযোগ্য প্রচলিত দ্রব্য ও অপ্রচলিত দ্রব্যের উৎপাদন বহুগুণে বাড়াতে পারলে সহজে রপ্তানি বাজার সম্প্রসারিত হবে। রপ্তানি পণ্যের মনোন্নয়ন; পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি, ব্যয় হ্রাস, আইটেম বৃদ্ধি বা শ্রেণিবিন্যাস বিষয়গুলো যেমন গুরুত্বপূর্ণ তার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো পণ্যের গুণগত মানের উন্নয়ন। গুণগত মান ঠিক থাকলেই কেবল উপযুক্ত বিষয়গুলোর মাধ্যমে রপ্তানি সম্প্রসারণ হতে পারে।

৯. বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কেন গুরুত্বপূর্ণ।
উত্তর: আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মাধ্যমে তুলনামূলক বায় সুবিধার ভিত্তিতে বাংলাদেশ তার সীমিত সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার করতে পারে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মাধ্যমে বাংলাদেশ অতিপ্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে এবং তা দ্বারা শিল্পের প্রয়োজনীয় কাঁচামালও যন্ত্রপাতি আমদানি করতে পারে। এ বাণিজ্যের মাধ্যমে বাংলাদেশ অনুৎপাদিত প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি, আধুনিক কারিগরি জ্ঞান ও প্রযুক্তি আমদানি করতে পারে। এসব বিভিন্ন সুবিধা অর্জনের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য আন্তর্জাতিক বাণিজ্য গুরুত্বপূর্ণ।

১০. ট্যাক্স হলিডে সুবিধা কোন ধরনের শিল্পকে দেয়া হয় এবং কেন? 
উত্তর: ট্যাক্স হলিডে সুবিধা রপ্তানিমুখী শিল্পকে দেয়া হয়। বাংলাদেশের রপ্তানিমুখী শিল্পের দ্রুত প্রসারের লক্ষ্যে দেশের শিল্পনীতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে উদ্যোক্তাদেরকে ‘ট্যাক্স হলিডে’ সুবিধা প্রদান করা হয়। রপ্তানি পণ্যের দাম কম রাখার জন্য রপ্তানিমুখী শিল্পের উৎপাদন ব্যয় হ্রাস করতে হয়। এ উদ্দেশ্যে রপ্তানিমুখী শিল্পে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম হ্রাস, প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানির ওপর কর রেয়াত, ট্যাক্স হলিডে সুবিধা প্রদান ইত্যাদি ব্যবস্থা গ্রহণ করার দরকার হয়। এসব কারণে রপ্তানিমুখী শিল্পকে ট্যাক্স হলিডে সুবিধা দেয়া হয়।

১১. অপ্রচলিত রপ্তানি পণ্য বলতে কী বোঝায়? 
উত্তর: যেসব পণ্যসামগ্রী কিছুদিন আগেও বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি করা হতো না; কিন্তু সাম্প্রতিককালে রপ্তানি করা হচ্ছে এসব পণ্যকে অপ্রচলিত পণ্য বলা তৈরি পোশাক, হিমায়িত খাদ্যসামগ্রী, হোসিয়ারি দ্রব্য, হস্তশিল্পজাত দ্রব্য, সার ও রাসায়নিক দ্রব্য, কৃষিজাত দ্রব্য , যথা— শাকসবজি, ফলমূল প্রভৃতি বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্য তালিকায় নতুন সংযোজন। পূর্বে যেসকল পণ্য রপ্তানি হতো এর মধ্যে এসব পণ্য অন্তর্ভূক্ত ছিল না থাকলেও এর পরিমাণ ছিল খুবই সামান্য। এসব নতুন নতুন পণ্যসামগ্রীকে অপ্রচলিত রপ্তানি পণ্য বলা হয়।

১২. বিশ্বায়নের ফলে বেকারত্ব বৃদ্ধি পায় কিনা? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: বিশ্বায়নের ফলে বেকারত্ব বৃদ্ধি পায় না। বিশ্বায়নের মূল উদ্দেশ্যই হলো বাজারকে উন্মুক্ত করে সীমানাবিহীন এক বিশ্বব্যবস্থা গড়ে তোলা। এটি এমন একটি বহুমুখী ব্যবস্থা যেখানে পুরো বিশ্ব ক্রমবর্ধমান আন্তঃসম্পর্ক এবং আন্তঃযোগাযোগ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয় বাজার উন্মুক্ত থাকায় এবং আন্তঃযোগাযোগ বৃদ্ধি পাওয়ায় বিশ্বায়ন ব্যবস্থায় বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে শ্রম বা শ্রমশক্তি অবাধে চলাচল করতে পারে। এর ফলে শ্রমের গতিশীলতা বৃদ্ধি পায় এবং বেকার সমস্যার সমাধান হয়। তাই বলা যায়, বিশ্বায়নের ফলে বেকারত্ব বৃদ্ধি না পেয়ে বরং তা হ্রাস পায়।

১৩. বিশ্বায়নের একটি ইতিবাচক ও একটি নেতিবাচক প্রভাব লেখো। 
উত্তর: বিশ্বায়নের একটি ইতিবাচক ও একটি নেতিবাচক প্রভাব নিচে দেওয়া হলো বিশ্বায়নের একটি ইতিবাচক দিক হলো, বিশ্বায়নের ফলে সমগ্র বিশ্বব্যাপী উৎপাদনে ব্যবহৃত উপকরণের গতিশীলতা তথা শ্রম, পুঁজি ও প্রযুক্তির প্রবাহ বৃদ্ধি পায়। ফলে বিশ্বব্যাপী কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পায় এবং বেকারত্ব হ্রাস পায় অন্যদিকে বিশ্বায়নের নেতিবাচক দিক হলো বিশ্বায়নের ফলে দেশীয় শিল্পের বিকাশ ব্যাহত হয়। মুক্তবাজার অর্থনীতি বিরাজ করায় অনেক ক্ষেত্রে এতে দেশীয় পণ্যের অস্তিত্ব হুমকির সম্মুখীন হয়।

১৪. সংস্কৃতির ক্ষেত্রে বিশ্বায়নের প্রভাব কেমন?
উত্তর: সংস্কৃতির ক্ষেত্রে বিশ্বায়নের প্রভাব ইতিবাচক। মানুষ দৈনন্দিন জীবনে যা কিছু করে সবই সংস্কৃতির অন্তর্ভুক্ত। বিশ্বায়নের ফলে ইন্টারনেট ও স্যাটেলাইট চ্যানেলের মাধ্যমে আমরা প্রতিনিয়ত বিশ্ব সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হচ্ছি। অন্য দেশের সংস্কৃতি আমাদের দেশে প্রবেশ করছে ও আমাদের সংস্কৃতি বিশ্ব সংস্কৃতির অংশে পরিণত হচ্ছে। ফলে শিক্ষা বিনোদন, খেলাধুলা ইত্যাদিতে আমাদের অংশগ্রহণ বিশ্বব্যাপি রূপ লাভ করছে তাই এর প্রভাব সংস্কৃতিতে ইতিবাচক।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url