অর্থনীতি কাকে বলে? অর্থনীতির উৎপত্তি ও বিকাশ

জ্ঞান - বিজ্ঞানের উন্নতির সাথে অর্থনীতি বিষয়ের পরিধিও অনেক বেড়েছে। অতীত ও বর্তমান অর্থনীতি বিষয়ের সমন্বয়ে অর্থনীতি বিষয় এখন অনেক উন্নত বা সমৃদ্ধ। প্রথমে যারা অর্থনীতি বিষয়ে উপস্থাপন করেছেন এদের মধ্যে অ্যাডাম স্মিথ, ডেভিড রিকার্ডো এবং জন স্টুয়ার্ট মিল অর্থনীতিকে সম্পদের উৎপাদন ও বণ্টনের বিজ্ঞান বলে মনে করেন। এদের মধ্যে অ্যাডাম স্মিথকে অর্থনীতির জনক বলা হয়। অর্থনীতির এই ধারা ক্লাসিক্যাল অর্থনীতি হিসেবে পরিচিত। তখন অর্থনীতি বা Economics- এর নাম ছিল রাজনৈতিক অর্থনীতি বা Political Economy। অ্যাডাম স্মিথের প্রদত্ত 
অর্থনীতি কাকে বলে?


অর্থনীতির সংজ্ঞা


অর্থনীতি এমন একটি বিজ্ঞান, যা জাতিসমূহের সম্পদের ধরণ ও কারণ অনুসন্ধান করে। সম্পদকে কেন্দ্র করে অর্থনীতি গড়ে ওঠে। তাই সম্পদ আহরণ ও উৎপাদনই মানুষের অর্থনৈতিক কার্যাবলির মূল উদ্দেশ্য। 

স্মিথের সংজ্ঞার দুর্বলতা হলো:

১. অর্থনীতি মানুষের অসীম অভাবকে কীভাবে সীমিত সম্পদ দিয়ে মেটাবে, এই সংজ্ঞায় তার উল্লেখ নেই।

২.জাতীয় সম্পদের উপর অধিক জোর দেওয়া হলেও ব্যক্তি মানুষ ও তার কাজ - কর্মকে অবহেলা করা হয়েছে। 

৩ . সম্পদ আহরণের উপর গুরুত্ব দেওয়া হলেও কী উপায়ে সম্পদ যোগাড় করা হবে তা বলা হয়নি। 

৪. সম্পদ বলতে দ্রব্যকেই বোঝানো হয়েছে কিন্তু সেবা সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি।

অধ্যাপক মার্শাল কর্তৃক প্রদত্ত অর্থনীতির সংজ্ঞা অধ্যাপক আলফ্রেড মার্শাল সম্পদের চেয়ে মানবকল্যাণের উপর অধিক গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন,
অর্থনীতি মানবজীবনের সাধারণ কার্যাবলি আলোচনা করে।
অর্থনীতির মূল আলোচ্য বিষয় মানুষের অর্থ উপার্জন এবং অভাব মোচনের জন্য সেই অর্থের ব্যয়। অর্থাৎ অর্থনীতির মূল উদ্দেশ্য হলো মানুষের কল্যাণ সাধন। মার্শাল শুধু মানুষের বাস্তব কল্যাণ সাধন করা নিয়েই আলোচনা করেছেন। বর্তমানে সম্পদের স্বল্পতার সমস্যাই অর্থনীতির মূল সমস্যা। 

মার্শালের সংজ্ঞায় মানুষের এ মৌলিক সমস্যাটি বিবেচনা করা হয়নি। অধ্যাপক এল. রবিন্স প্রদত্ত অর্থনীতির সংজ্ঞা অধ্যাপক এল. রবিন্স অর্থনীতির অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। তাঁর মতে,
অর্থনীতি হলো এমন একটি বিজ্ঞান, যা মানুষের অসীম অভাব এবং বিকল্প ব্যবহারযোগ্য দুষ্প্রাপ্য উপকরণসমূহের মধ্যে সমন্বয় সাধনকারী কার্যাবলি আলোচনা করে।
এ সংজ্ঞার বৈশিষ্ট্যগুলো নিম্নরূপ: 
১. মানুষের অভাব অসীম এবং অভাবের প্রকৃতি ও পরিমাণ বিভিন্ন রকমের।

২. অভাব পূরণকারী সম্পদ ও সময় খুবই সীমিত।

৩. অসীম অভাবকে কীভাবে সীমিত সম্পদ দ্বারা সমন্বয় সাধন করা যায়, তা অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয়।

৪. সম্পদের যোগান সীমিত বলে একই সম্পদ দ্বারা আমাদের বিভিন্ন অভাব পূরণের চেষ্টা করতে হয়।

৫. অভাবের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে তা পূরণ করতে হয়। এসব কারণে এ সংজ্ঞাটিকে অধিকতর সুনির্দিষ্ট এবং গ্রহণযোগ্য বলে মনে করা হয়।

রবিন্সের সংজ্ঞাটির সমালোচনা


১. রবিন্স অর্থনীতির বিষয়বস্তুকে বেশি বিস্তৃত দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখেছেন।

২. মানুষ তার ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে এমন কিছু পছন্দ করে, যা অর্থনীতিতে আলোচনা হয় না।

৩. অর্থনৈতিক কাজকর্মের মূল উদ্দেশ্য যে মানবকল্যাণ তার উল্লেখ নেই।

৪. রবিন্সের সংজ্ঞায় অর্থনীতির সামাজিক পছন্দকে আলোচনা করা হয়নি।

৫. আধুনিক বিশ্বের অর্থনৈতিক উন্নয়ন তার সংজ্ঞায় আসেনি।

৬. রবিন্স অর্থনীতিতে শুধু মূল্য নিয়ে আলোচনা করেছেন কিন্তু জাতীয় আয়, নিয়োগব্যবস্থা, বিনিয়োগ, বণ্টন ইত্যাদি আলোচনা করেননি।

সবশেষে বলা যায় রবিন্সের সংজ্ঞা অপেক্ষাকৃত বিমূর্ত। অর্থনীতিতে কোনো তত্ত্বই সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। তাই ত্রুটি বিচ্যুতি থাকার পরেও রবিন্সের সংজ্ঞাটি অধিক গ্রহণযোগ্য। কারণ এটি অর্থনীতির প্রধান সমস্যাটিকে সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে পেরেছে।

অর্থনীতির উৎপত্তি ও বিকাশ


আজকের যে অর্থনীতি আমরা পড়ি, পূর্বে এতটা জটিল ছিল না। সনাতন বা আদিম সমাজে মানুষের জীবনযাপন ছিল অত্যন্ত সহজ সরল। খাবার দাবার, কাপড় চোপড় এবং বাড়িঘর- এসবই ছিল মানুষের মৌলিক চাহিদা। দ্রব্য সামগ্রী বিনিময়ের রীতি ছিল খুব সীমিত। মূলত মানুষের কায়িক পরিশ্রম ছিল উৎপাদনের একমাত্র উপকরণ।

সমাজে কোনো শ্রেণিভেদ ছিল না। হযরত মুসা (আ:) এর সময় ২৫০০ খ্রিষ্টপূর্ব হিব্রু (Hebrew) সভ্যতার যুগে ধর্মগ্রন্থে অর্থনীতি বিষয়ে সরলভাবে কিছু আলোচনা হতো। আইন, ধর্ম, নৈতিকতা, দর্শন এবং অর্থনীতি তখন একসঙ্গে আলোচিত হতো। অর্থনীতি বিষয়ের আলাদা কোনো অস্তিত্ব ছিল না। উৎপাদন, ভোগ ও দৈনন্দিন সংসার পরিচালনার বিদ্যাকেই তখন অর্থনীতি বলা হতো।

অর্থনীতি কোন শব্দ থেকে উৎপত্ত?


অর্থনীতির ইংরেজি শব্দ Economics গ্রিক শব্দ Oikonomia থেকে এসেছে। Oikonomia অর্থ গৃহস্থালির ব্যবস্থাপনা (Management of the Household)। প্লেটো (৪২৭-৩৪৭ খ্রিষ্টপূর্ব) এবং এরিস্টটল (৩৮৪-৩২২ খ্রিষ্টপূর্ব) ছিলেন গ্রিক সভ্যতার বিখ্যাত দুই চিন্তাবিদ। এ দুজন চিন্তাবিদ ব্যক্তিগত সম্পত্তি, শ্রমিকের মজুরি, দাসপ্রথা ও সুদসহ অর্থনীতির অনেক মৌলিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। 

প্রাচীন ভারতে চতুর্থ খ্রিষ্টপূর্বে কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে বৃহত্তর পরিসরে সারা দেশের রাজনীতি, সমাজ, অর্থনীতি ও সামরিক বিষয়ের উপর আলোকপাত করা হয়। দেশের ধন - সম্পদ বৃদ্ধি, রাষ্ট্রের ক্ষমতা বৃদ্ধি ও বাণিজ্য উদ্বৃত্তকরণের লক্ষ্যে ইংল্যান্ডের ব্যবসায়ীরা বেশি রপ্তানি করত এবং খুব সামান্যই আমদানি করত। ইংল্যান্ডের উৎপাদিত পণ্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রচুর পরিমাণে রপ্তানি করে মূল্যবান ধাতু (সোনা, রুপা, হীরা ইত্যাদি) আমদানি করা হতো।

অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে ফরাসিরা সে দেশের ধনী মানুষের বিলাসী জীবনযাপন, অতিরিক্ত করারোপ এবং ইংল্যান্ডের বাণিজ্যবাদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে ভূমিবাদ (Physiocracy) মতবাদ প্রচার করেন। ভূমিবাদীদের মতে, কৃষিই (খনি ও মৎসক্ষেত্রসহ) হলো উৎপাদনশীল খাত। অন্যদিকে শিল্প ও বাণিজ্য উভয়ই অনুৎপাদনশীল খাত হিসেবে মনে করা হতো।

এভাবেই প্রাচীন এবং মধ্যযুগে অর্থনীতিবিষয়ক আলোচনা ক্রমশ নানা বিষয়ের সমন্বয়ে জটিল হতে থাকে। রাজনৈতিক অর্থনীতি একটি স্বতন্ত্র বিষয় হিসেবে স্বীকৃতি পায়, যখন ইংরেজ অর্থনীতিবিদ অ্যাডাম স্মিথ ১৭৭৬ সালে তার বিখ্যাত বই “An Inquiry into the Nature and Causes of the Wealth of Nations” রচনা করেন।

অর্থনীতি কত প্রকার ও কি কি


অর্থনীতিকে দুটি দৃষ্টিকোন থেকে ভাগ করা হয়েছে।

বিষয়বস্তু উপর ভিত্তি করে অর্থনীতিকে সাধারণ দুইভাগে ভাগ করা যায়।

১. ইতিবাচক অর্থনীতি ও
২. নীতিবাচক অর্থনীতি।

ইতিবাচক অর্থনীতি Positive Economics


অর্থনীতিতে যা ঘটছে বা হচ্ছে, সেগুলোকে ইতিবাচক অর্থনীতি বলে। অর্থাৎ, বাস্তব ভিত্তিক অর্থনৈতিক ঘটনাবলীকে ইতিবাচক অর্থনীতির আলোচ্য বিষয়। এই বিশ্লেষণের মাধ্যমে অর্থনীতির বিভিন্ন জটিল সমস্যার কারণ ও সমাধান সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায়।
ইতিবাচক অর্থনীতির আলোচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে:

১. বেকারত্ব

২. মুদ্রাস্ফীতি

৩. বিনিয়োগ

৪. উৎপাদন

৫. আর্থিক বাজারের কার্যপ্রণালী বাণিজ্য


ইতিবাচক অর্থনীতির লক্ষ্য হলো অর্থনীতির বাস্তব পরিস্থিতিকে যথাযথভাবে বোঝাতে পাড়া। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য ইতিবাচক অর্থনীতি বাস্তব তথ্য ও অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞানের ওপর নির্ভর করে।

ইতিবাচক অর্থনৈতির উদাহরণ


ইতিবাচক অর্থনৈতির একটি উদাহরণ হল মুদ্রাস্ফীতি ঘটনা। যদি মুদ্রাস্ফীতি হয় তাহলে পণ্য ও সেবার দাম বৃদ্ধি পায়। ফলশ্রুতিতে জনগণের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পায়। ইতিবাচক অর্থনীতি মুদ্রাস্ফীতির কারণ ও সমাধান সম্পর্কে গবেষণা করে।

বেকারত্বও একটি ইতিবাচক অর্থনৈতিক ঘটনা। বেকারত্ব হলে একটি দেশের কর্মক্ষম জনসংখ্যার একটি অংশ কাজ পায় না। এর ফলে সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা দেখা দেয়। এই ইতিবাচক অর্থনীতি বেকারত্বের কারণ ও সমাধান সম্পর্কে গবেষণা করে থাকে।

নীতিবাচক অর্থনীতি Normative Economics


নীতিবাচক অর্থনীতিতে সেই সকল বক্তব্য স্থান পায় যেগুলো উচিত অনুচিতের প্রশ্ন দ্বারা আবদ্ধ। অর্থনীতিতে কোনটি হওয়া উচিত আর কোনটি হওয়া উচিত নয় ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়ে থাকে। এই অর্থনীতিতে কোনো সমস্যা বা জটিলতা দেখা দিলে তা বাস্তব তথ্য ও অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান দ্বারা সমাধান করা সম্ভব হয় না।

উপরের উদাহরণের প্রেক্ষিতে যদি বলা হয় মুদ্রাক্ষীতি সমস্যা সমাধানের পূর্বে বেকারত্ব সমস্যা সমাধান করা উচিত, তাহলে এই বক্তব্যটি হবে নীতিবাচক অর্থনৈতিক বক্তব্য।

বিষয়টি আরও স্পষ্ট করে বলতে গেলে। যদি মুদ্রাস্ফীতিতে দ্রব্যের দাম বাড়ে তাহলে ভোক্তার কষ্ট হয়, অন্যদিকে বেকারত্বের জন্য জনগনের জীবনযাত্রার মান কমে যায়। অতএব মুদ্রাস্ফীতি ও বেকার সমস্যার সমাধান করতে হবে। ইত্যাদি হলো নীতিবাচক অর্থনৈতিক বিষয় ।

আবার তাত্ত্বিক দিক থেকে অর্থনীতি দুইভাগে ভাগ করা যায়।

১. ব্যষ্টিক অর্থনীতি ও
২. সামষ্টিক অর্থনীতি।

এবার চলুন ব্যষ্টিক ও সামষ্টিক অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা করা যাক। এই দুটি মূলত অর্থনীতির দুটি শাখা।

ব্যষ্টিক অর্থনীতি Microeconomics


ব্যষ্টিক অর্থনীতি হল অর্থনীতির একটি শাখা যা ব্যক্তি, পরিবার, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য ক্ষুদ্র অর্থনৈতিক বিষয়গুলোর আচরণ এবং সিদ্ধান্তগুলিকে বিশ্লেষণ করে থাকে। এই শাখার নামকরণ করা হয়েছে গ্রীক শব্দ "মাইক্রোস" থেকে, যার অর্থ "ছোট" বা ক্ষুদ্র।

ব্যষ্টিক অর্থনীতির মূল বিষয়গুলির মধ্যে রয়েছে:

১. উৎপাদন

২. মুনাফা

৩. মূল্য নির্ধারণ

৪. চাহিদা এবং যোগান

৫. সঞ্চয় এবং বিনিয়োগ


ব্যষ্টিক অর্থনীতির মাধ্যমে আমরা অর্থনীতির মৌলিক নীতিগুলি বুঝতে পারি, যেমন: উৎপাদন সম্ভাবনা সীমানা
সুযোগ ব্যয়, অর্থনৈতিক সমতা।

ব্যষ্টিক অর্থনীতির ধারণাগুলি বুঝে আমরা আমাদের ব্যক্তিগত জীবনে এবং ব্যবসায়িক সিদ্ধান্তগুলিতে প্রয়োগ করতে পারি। উদাহরণস্বরূপ, আমরা ব্যষ্টিক অর্থনীতির ধারণাগুলি ব্যবহার করে আমাদের আয়ের সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে পারি, আমাদের ব্যবসায়ের জন্য সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জন করতে পারি এবং অর্থনৈতিকভাবে স্থিতিশীল সমাজের জন্য অবদান রাখতে পারি।

ব্যষ্টিক অর্থনীতির উদাহরণ


১. একজন ব্যক্তি একটি নতুন মোটর গাড়ি কেনার সিদ্ধান্ত নিল।

২. কোন প্রতিষ্ঠান নতুন কোন পণ্য বা পরিষেবা চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়।

৩. মনে করেন কোন সরকার মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য কোন অর্থনৈতিক নীতি প্রণয়ন করে।

এই উদাহরণগুলিতে, আমরা ব্যক্তি, পরিবার, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং সরকারের আচরণ এবং সিদ্ধান্তগুলিকে দেখতে পাই। ব্যষ্টিক অর্থনীতি এই আচরণ এবং সিদ্ধান্তগুলিকে ব্যাখ্যা করে এবং এর প্রভাবগুলি অন্বেষণ করে।

সামষ্টিক অর্থনীতি Macroeconomics


সামষ্টিক শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ হল “ম্যাক্রো”। গ্রীক শব্দ “মাক্রোস” থেকে এই শব্দটি এসেছে, যার অর্থ “বৃহৎ” বা “বিশাল”। সামষ্টিক অর্থনীতি হল অর্থনীতির একটি শাখা যা একটি দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক কার্যকলাপ নিয়ে আলোচনা করে। এটি একটি দেশের অর্থনীতির বিভিন্ন দিক, যেমন:

১. জাতীয় আয়
২. মুদ্রাস্ফীতি
৩. সামগ্রিক চাহিদা
৪. সামগ্রিক যোগান
৫. মোট সঞ্চয়
৬. মূল্যস্তর
৭. বেকারত্বের হার
৮. আমদানি-রপ্তানি

সামষ্টিক অর্থনীতিতে, ব্যক্তিগত স্তরের পরিবর্তে সামগ্রিক স্তরে অর্থনৈতিক কার্যকলাপ বিশ্লেষণ করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, ব্যক্তির আয়ের পরিবর্তে জাতীয় আয়, ব্যক্তিগত চাহিদার পরিবর্তে সামগ্রিক চাহিদা, ব্যক্তিগত যোগানের পরিবর্তে সামগ্রিক যোগান, ব্যক্তিগত সঞ্চয়ের পরিবর্তে মোট সঞ্চয়, মূল্যস্তর, মুদ্রাস্ফীতি, বেকারত্বের হার একটি দেশের আমদানি-রপ্তানি ইত্যাদি।

সামষ্টিক অর্থনীতির উদ্দেশ্য হল একটি দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক কার্যকলাপকে বুঝতে এবং নিয়ন্ত্রণ করতে। এটি অর্থনৈতিক নীতি নির্ধারণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার।

অর্থনীতি বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর


Q. অর্থনীতি কি বিষয়ক শাস্ত্র?
উত্তর: অর্থনীতি বা অর্থশাস্ত্র সামাজিক বিজ্ঞান এর একটি শাখা যা পণ্য এবং সেবার উৎপাদন, সরবরাহ, বিনিময়, বিতরণ এবং ভোগ ও ভোক্তার আচরণ নিয়ে আলোচনা করে।

Q. ইকোনমিক্স এর মানে কি?
উত্তর: Economics বা অর্থনীতি হলো একটি বিজ্ঞান যা কিভাবে সীমিত সম্পদকে কাজে লাগিয়ে পণ্য ও সেবা উৎপাদন করে তা ব্যবহারের জন্য বন্টন করা হয়, সেটা আলোচনা করে।

Q. অর্থনৈতিক এর জনক কে?
উত্তর: পল অ্যান্থনি স্যামুয়েলসন (ইংরেজি: Paul Anthony Samuelson)। তিনি ১৫ই মে, ১৯১৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি আধুনিক অর্থনীতির জনক, বিখ্যাত মার্কিন অর্থনীতিবিদ এবং ১৯৭০ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url