শেয়ার বাজারের ধারণা | Concept of Share Market
শেয়ার বাজার বা স্টক এক্সচেঞ্জ কাকে বলে?
শেয়ারবাজার বা স্টক এক্সচেঞ্জ শব্দ দুটির মধ্যে মৌলিক কোনো পার্থক্য নেই। ‘শেয়ারবাজার’ ব্রিটিশ অর্থনীতিতে আর ‘স্টক এক্সচেঞ্জ’ আমেরিকান অর্থনীতিতে প্রচলিত ধারণা। যে বাজারে তালিকাভুক্ত সরকারি ও বেসরকারি কোম্পানির শেয়ার ও ঋণপত্র ক্রয় - বিক্রয় হয় তাকে শেয়ারবাজার বা স্টক এক্সচেঞ্জ বলে।
অন্যভাবে বলা যায়, পুঁজি বা মূলধন বাজারের যে অংশে কোম্পানির শেয়ার বা ইক্যুইটির ক্রয় - বিক্রয় করা হয় তাকে শেয়ারবাজার বলে।
অধ্যাপক ড. হ্যারম্ভ এর মতে,
স্টক এক্সচেঞ্জ হলো একটি সুসংগঠিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান, যেখানে পাবলিক কোম্পানিসমূহের শেয়ার ও ঋণপত্র ক্রয় বিক্রয় হয়।
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানির শেয়ার, বন্ড, ডিবেঞ্চার ইত্যাদি লেনদেন হয়। এটি মূলত ঋণপত্রের মধ্যবর্তী রাজার হিসেবে কাজ করে। এখানে শেয়ারের মূল্য বৃদ্ধি পেলে বিনিয়োগকারী লাভবান হয়। আবার শেয়ারের মূল্য কমে গেলে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
অতএব বলা যায়, যে সুসংগঠিত প্রতিষ্ঠানে শেয়ার, বন্ড ও অন্যান্য আর্থিক সম্পদ আনুষ্ঠানিকভাবে বেচাকেনা হয় তাকে শেয়ারবাজার বা স্টক এক্সচেঞ্জ বলে।
শেয়ারবাজারের প্রকারভেদ| Classifications of Share Market
শেয়ারবাজার তিন প্রকার। যথা—
১. প্রাথমিক শেয়ারবাজার (Primary Share Market): কোম্পানি বাজারে নতুন শেয়ার ছাড়লে তাকে প্রাথমিক শেয়ার বলে। শেয়ার সার্টিফিকেটের গায়ে লিখিত ফেস ভেল এর ভিত্তিতে প্রাথমিক শেয়ার ক্রয় - বিক্রয় হয়। প্রাথমিক শেয়ার বাজারের অবশ্যই শেয়ার অবলেখিত (face value) হতে হয়। বাংলাদেশে আই.সি.বি ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এই অবলেখনের কাজ করে।
২. মাধ্যমিক শেয়ারবাজার (Secondary Share Market): প্রাথমিক শেয়ার ইস্যু করার পর পরবর্তীতে শেয়ারের ক্রয় বিক্রয়কে মাধ্যমিক শেয়ারবাজার বলে। বি.ও. অ্যাকাউন্টধারী যে কেহ ব্রোকার হাউসের মাধ্যমে তা বিক্রয় করতে পারে। মূলত এ বাজারই হলো শেয়ার বাজারের শেয়ার ব্যবসায়ের প্রাণকেন্দ্র। এ বাজারে প্রতিদিনি শেয়ারের মূল্য ওঠা - নামা করে।
৩. ওভার দ্যা কাউন্টার মার্কেট (OTC Market): যেসব কোম্পানি দীর্ঘদিন ডিভিডেন্ট দেয় না বা পরস্পর ৫ বছর এজিএম করে না তাদের শেয়ার মূল মার্কেটের বাইরে ক্রয় বিক্রয় হয় যাকে ওভার দ্যা কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেট বলে। শেয়ারবাজারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সরকার জনসাধারণের কাছে শেয়ার এবং বন্ড বিক্রি করে অর্থসংস্থান করে।
অর্থ সংস্থানের কৌশল হিসেবে প্রাথমিক শেয়ারবাজারের মাধ্যমে কোম্পানি প্রাথমিক গণ প্রস্তাব (Initial Public Offering বা IPO) ব্যক্তিগত উপস্থাপনা (Private Placement বা PP) ইত্যাদি ব্যবস্থা গ্রহণ করে শেয়ার বিক্রি করে।
প্রতিটি শেয়ারের মূল্যমান সুনির্দিষ্ট থাকলেও যেকোনো দ্রব্যের মতো চাহিদা ও যোগানের ভিত্তিতে শেয়ারবাজারে শেয়ারের দাম নির্ধারিত হয়। এ বাজারে স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্ত কোম্পানি ছাড়া অন্য কোনো কোম্পানির শেয়ার, বন্ড, ডিবেশ্যার ইত্যাদি ক্রয় - বিক্রয় হতে পারে না।
কোনো তালিকাভুক্ত কোম্পানির প্রাথমিক শেয়ার ইস্যু হওয়ার পর তা যখন জনসাধারণের মধ্যে ক্রয় -বিক্রয় করা হয়, তখন তাকে মাধ্যমিক বাজার বলা হয়। সাধারণ ক্রেতা - স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্ত সদস্যবৃন্দের মাধ্যমে মাধ্যমিক বাজার থেকে শেয়ার ক্রয় - বিক্রয় করে থাকে।