পরামর্শমূলক নির্দেশনার গুরুত্ব | Importance of Consultative Direction

পরামর্শমূলক নির্দেশনা কর্মীদের নির্দেশনা দেওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত উপযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ একটি পদ্ধতি বা কৌশল হিসেবে স্বীকৃত। একক ব্যক্তির অনেক সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে। এ পদ্ধতির মাধ্যমে তা দূর করা সম্ভব। নিচে পরামর্শমূলক নির্দেশনার গুরুত্ব উপস্থাপন করা হলো:

উৎসাহ ও মনোবল বৃদ্ধি (Increasing inspiration and morale): পরামর্শমূলক নির্দেশনায় নির্বাহীরা কর্মীনের সাথে পরামর্শ করে নির্দেশনার বিষয়বস্তু ঠিক করেন। এরূপ নির্দেশনাকে কর্মীরা নিজেদের তৈরি বলে মনে করেন। ফলে, কর্মীরা আনন্দের সাথে তা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেন। তাছাড়া, নির্বাহীর সাথে আলাপ-আলোচনা ও পরামর্শ করার সুযোগ পেয়ে কর্মীদের মনোবল বাড়ে এবং আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়।
পরামর্শমূলক নির্দেশনার গুরুত্ব
কর্মীদের মানোন্নয়ন (Development of employee standards): মূলত কর্মীরাই মাঠ পর্যায়ের কাজের সাথে সরাসরি জড়িত থাকেন। তাই তাদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে নির্দেশনার বিষয়বস্তু প্রস্তুত করা হলে, তা বেশি কার্যকর ও বাস্তবসম্মত হয়ে থাকে। অপরদিকে নির্বাহীর সংস্পর্শে এসে এবং আলোচনায় অংশগ্রহণ করে অধীনস্থরা অনেক কিছু জানতে ও শিখতে পারেন। এতে কর্মীদের ব্যক্তিগত যোগ্যতার উন্নয়ন ঘটে।

গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা (Establishing democracy): পরামর্শমূলক নির্দেশনার মাধ্যমে নির্বাহী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে থাকেন। এক্ষেত্রে নির্বাহী এককভাবে সিদ্ধান্ত নেন না। তিনি কর্মীদের সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা ও পরামর্শের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেন। এতে একনায়কতান্ত্রিক মনোভাবের বিলোপ এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।

সহযোগিতার উন্নয়ন (Developing cooperation): নির্বাহী ও অধীনস্থদের পারস্পরিক আলোচনা ও মতবিনিময়ের কারণে উভয়ের মধ্যকার দূরত্ব কমে যায়। এতে ভুল-বোঝাবুঝির অবসান হয়। ফলে তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়। তাছাড়া এরূপ নির্দেশনার মাধ্যমে নির্বাহীদের প্রতি অধীনস্থদের শ্রদ্ধাবোধ ও আনুগত্য তৈরি হয়। এতে তাদের মধ্যে সহযোগিতামূলক মনোভাব তৈরি হতে থাকে।

প্রশিক্ষণের সুযোগ (Training facility): জ্ঞান, দক্ষতা ও সক্ষমতা অর্জনে হাতেকলমে শিক্ষা নেওয়াকে প্রশিক্ষণ বলে। পরামর্শমূলক নির্দেশনায় কর্মীরা অভিজ্ঞ নির্বাহীদের সাথে মতবিনিময়ের সুযোগ পান। এর মাধ্যমে তারা অনেক কিছু জানতে ও শিখতে পারেন। পরে তা আন্তরিকতার সাথে তারা কাজে লাগান। ফলে, এ ধরনের নির্দেশনার মাধ্যমে সহজেই প্রশিক্ষণ কাজ সম্পন্ন হয়ে যায়।

উৎপাদন বৃদ্ধি (Increasing production): পরামর্শমূলক নির্দেশনা দ্বারা কর্মীদের মনোভাব ইতিবাচক ও সহযোগিতামূলক হয়। তারা প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের মনে করে কাজ করে। ফলে তারা বেশি উৎপাদন করতে পারে। তাছাড়া এরূপ নির্দেশনায় দক্ষতা বাড়ে।

সহজ নিয়ন্ত্রণ (Easy control): এরূপ নির্দেশনায় কর্মীরা আগে থেকেই মানসিকভাবে নির্দেশ পালনে প্রস্তুত থাকেন। সময়মতো কাজ শুরু করে তা দ্রুত বাস্তবায়নের সুযোগ পান। এছাড়া ব্যবস্থাপনার প্রতি সংশ্লিষ্ট কর্মীরা অধিক অনুগত থাকেন। এতে নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়াও সহজ হয়।

তাই বলা যায়, পরামর্শমূলক নির্দেশনা কর্মীদের মনোবল বাড়ানোর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের সাফল্য অর্জনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। তাই, ক্ষেত্রবিশেষে এরূপ নির্দেশনার ব্যবহার বাড়ানো উচিত।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url