অফশোর ব্যাংকিং কি?Offshore bank
অফশোর ব্যাংকিং হলো ব্যাংকের ভেতরে পৃথক ব্যাংকিং সেবা। অফশোর ব্যাংকিং প্রচলিত ব্যাংকিং কার্যক্রমের চেয়ে ভিন্ন। কারণ এ জাতীয় ব্যাংকিং কার্যক্রমে আমানত গ্রহণ ও ঋণ দেওয়ার দুই কার্যক্রমই বৈদেশিক উৎস থেকে আসে ও বিদেশি গ্রাহকদের দেওয়া হয়। এই অফশোর ব্যাংকিং কার্যক্রম শুধু অনিবাসীদের মধ্যেই সীমিত থাকে।
অফশোর ব্যাংকিং কাকে বলে?
যে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় বৈদেশিক উৎস থেকে বৈদেশিক মুদ্রায় তহবিল সৃষ্টি হয় এবং প্রচলিত ব্যাংকিং আইনকানুনের বাইরে আলাদা আইনকানুনের মাধ্যমে এ তহবিল পরিচালিত হয় ও হিসাব সংরক্ষণ করা হয়, তাকেই বলা হয় অফশোর ব্যাংকিং। অফশোর ব্যাংকিং হলো ব্যাংকের ভেতরে আলাদা এক ব্যাংকিং ব্যবস্থা।
স্থানীয় মুদ্রার বিপরীতে মার্কিন ডলারের পাশাপাশি ব্রিটিশ পাউন্ড স্টার্লিং, জাপানি ইয়েন, কানাডীয় ডলার, সিঙ্গাপুরি ডলার, সুইস ফ্রাঁ ইত্যাদি বৈদেশিক মুদ্রায় অফশোর ব্যাংকিংয়ের হিসাব সংরক্ষণ করা হয়।
অফশোর ব্যাংকিংয়ে বিদেশি কোম্পানিকে ঋণ দেয়া ও বিদেশি উৎস থেকে আমানত সংগ্রহের সুযোগ রয়েছে। অফশোর ব্যাংকিংয়ে স্থানীয় মুদ্রার পরিবর্তে বৈদেশিক মুদ্রায় হিসাব হয়।
অফশোর ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে প্রচলিত ব্যাংকের কোনো নিয়ম - নীতিমালা প্রয়োগ করা হয় না। আলাদা আইনের মাধ্যমে এ তহবিল পরিচালিত হয় ও হিসাব সংরক্ষণ করা হয়।
কেবল মুনাফা ও লোকসানের হিসাব যোগ হয় ব্যাংকের মূল মুনাফায়। অফশোর ইউনিট থেকে ব্যাংকগুলো বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ দিয়ে থাকে।
এটি এমন এ ধরনের ব্যাংকিং কার্যক্রমকে নির্দেশ করে যা কিনা শুধু শুধুমাত্র অনিবাসীদের যেমন: মাল্টিন্যাশনাল পণ্য, সেবা এবং ফাইন্যান্সারদের সম্পৃক্ত করে। এটি দেশীয় ব্যাংকিংয়ের সাথে যুক্ত হয় না।
অফশোর ব্যাংকিং-এর সুবিধা
পৃথিবীর অনেক দেশেই এ পদ্ধতি অনুসরণ করে তাদের বৈদেশিক রিজার্ভ ও আর্থিক কাঠামোকে সমৃদ্ধ করেছে। এতে করে তারা শত শত কোটি ডলার বিনিয়োগ পেয়েছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এই ব্যাংকিং পদ্ধতিতে অসুবিধার চাইতে সুবিধাই বেশি। অফশোর ব্যাংকিংয়ে যে কোনও কোম্পানি বা ব্যক্তি দেশে বিদেশে সহজ শর্তে ব্যবসা করতে পারবে।
অনুমোদন বিহীন নতুন আইনের আওতায় সরকার এই ব্যাংকিং কার্যক্রমে আকর্ষণীয় সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে। প্রচলিত ব্যাংকিং ব্যবস্থার সাথে অফশোর ব্যাংকিং পার্থক্য হলো এতে বিধিনিষেধ একেবারেই কম। অফশোর ব্যাংকিং গ্রাহকের তথ্য চূড়ান্ত গোপনীয়তা বজায় রাখা হয়।
এই কার্যক্রমের আরেকটি সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো দেশে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বাড়বে। কারণ যারা এতে অংশ নেবে তাদের সর্বোচ্চ সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়। অনেক ক্ষেত্রেই তাদের সীমাবদ্ধতা কম থাকবে। কারণ বিদেশি মুদ্রার ক্ষেত্রে অফশোর ব্যাংকিংয়ে বিধিনিষেধ অনেক কম হয়ে থাকে।
অফশোর ব্যাংকিং এর অসুবিধা
অফশোর ব্যাংকিংয়ে সুবিধার মতো অসুবিধাও রয়েছে বলে মনে করছেন ব্যাংকাররা।
মনে করেন কেউ যদি অফশোরের ব্যাংকিংয়ে এর মাধ্যমে বিদেশ থেকে লোন নিয়ে দেশে ব্যবসা করছে , দেশে লোন শোধ করছে। এক্ষেত্রে তার এক্সপোর্ট সেভাবে না থাকলে ওই লোন শোধ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে।
তার মানে তাকে উল্টাে স্থানীয় টাকা দিয়ে লোন শোধ করার সুযোগ নেই। পর্যাপ্ত এক্সপোর্টের মাধ্যমে টাকা কাভার না করতে পারলে ওই লোন পরিশোধ কঠিন হয়ে পড়ে। তাই এ সমস্যা রোধে তদারকি করা প্রয়োজন। খেয়াল রাখতে হবে, যে কারণে লোন দেয়া হচ্ছে সেটা পালন হচ্ছে কিনা সেটা মনিটরিং জরুরি।