একটি নোট ছাপাতে কত খরচ হয়?
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বিভিন্ন মূল্যমানের নোট ছাপাতে আলাদা খরচ হয়।
- ১,০০০ টাকার নোট: ৫ টাকা
- ৫০০ টাকার নোট: ৪ টাকা ৭০ পয়সা
- ২০০ টাকার নোট: ৩ টাকা ২০ পয়সা
- ১০০ টাকার নোট: ৪ টাকা
- ১০, ২০, ৫০ টাকার নোট: ১ টাকা ৫০ পয়সা
- ৫ ও ২ টাকার নোট: ১ টাকা ৪০ পয়সা
এছাড়া, কয়েন তৈরি করতে সবচেয়ে বেশি খরচ হয়। প্রতিটি কয়েনের উৎপাদন ব্যয় প্রায় একই, তবে বিশ্বব্যাপী কাঁচামালের দাম বাড়ার কারণে ব্যয়ও কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ক্যাশলেস লেনদেনের দিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অগ্রগতি
নগদ টাকার প্রচলন কমাতে এবং ব্যয় নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক ধীরে ধীরে ডিজিটাল লেনদেন ও ক্যাশলেস অর্থনীতির দিকে ঝুঁকছে। এছাড়া, ঈদ উপলক্ষে প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত টাকা ছাপানোর সংস্কৃতি থেকেও সরে আসছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
প্রতি বছর নতুন নোট ছাপাতে সরকারের ব্যয় কমপক্ষে ৫০০ কোটি টাকা, কোনো কোনো বছর এটি ৭০০ কোটিও ছাড়িয়ে যায়। অতীতে ঈদ উৎসবে নতুন টাকা সেলামি হিসেবে দেওয়ার প্রচলন থাকায় বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতি বছর ঈদের আগে নতুন নোট বাজারে ছাড়ত। এবারও ২১১ কোটি টাকা মূল্যের নতুন নোট ছাড়ার পরিকল্পনা ছিল, তবে শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়েছে।
নোটের নতুন নকশা আসছে
৫ আগস্ট রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর বাংলাদেশের নোটের নকশায় পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। নতুন নোট বাজারে আসতে আরও দেড় মাস সময় লাগবে। এজন্য এবারের ঈদে নতুন টাকা ছাড়া হয়নি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানিয়েছেন,
আমরা অনলাইনভিত্তিক লেনদেনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, তাই নগদ টাকার ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে হবে। এজন্য ব্যাংকগুলোর মধ্যে ইন্টার অপারেবিলিটি চালু করা জরুরি। এক ব্যাংকের সঙ্গে অন্য ব্যাংক ও এক মোবাইল অপারেটর থেকে অন্য অপারেটরের মধ্যে আন্তঃলেনদেন চালু হলে নগদ টাকার চাহিদা কমে যাবে।
নগদ টাকার ব্যবহার কমানোর উদ্যোগ
বিশ্বের অনেক দেশ নগদ টাকার ব্যবহার কমিয়ে ডিজিটাল লেনদেনের দিকে যাচ্ছে। বাংলাদেশও এই পথে হাঁটছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ‘বিনিময়’ নামে একটি অ্যাপ চালু করেছে, যা এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে সহজে লেনদেনের সুযোগ দেবে। এছাড়া, কেনাকাটায় ‘বাংলা কিউআর’ পেমেন্ট সিস্টেম চালু রয়েছে, যা এখনো পুরোপুরি কার্যকর হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংক এগুলো আরও কার্যকর করতে কাজ করছে।
নোটের নকশা পরিবর্তন
নতুন নকশায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি বাদ দিয়ে ‘জুলাই বিপ্লবের গ্রাফিতি’ যুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আপাতত ২০, ১০০, ৫০০ ও ১,০০০ টাকার নোটের নকশা পরিবর্তন করা হচ্ছে। সরকার এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে এবং নতুন নোট ছাপানোর কাজ শুরু হয়েছে।
তবে এবারের ঈদে নতুন নকশার নোট নয়, বরং শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সংবলিত বর্তমান নোটই বাজারে ছাড়া হচ্ছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী মে মাসের মধ্যে নতুন নকশার নোট বাজারে আসবে।